অস্ট্রেলিয়ায় ‘মাশরুম লাঞ্চ খুনি’ প্যাটারসনের ৩৩ বছরের কারাদণ্ড

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ০১:০৮ পিএম

অস্ট্রেলিয়ায় ‘মাশরুম লাঞ্চ খুনি’ প্যাটারসনের ৩৩ বছরের কারাদণ্ড

ছবি: সংগৃহীত

বিষাক্ত মাশরুম দেওয়া খাবার খাইয়ে শ্বশুর, শাশুড়ি ও খালা শাশুড়িকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত এক নারীকে ন্যূনতম ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার এক আদালত।

এটি দেশটিতে কোনো নারীকে দেওয়া দীর্ঘ কারাদণ্ডগুলোর অন্যতম, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

সাজা ঘোষণার সময় সোমবার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক বলেন, দোষী এরিন প্যাটারসন তার শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়দের প্রতি কোনো দয়া দেখাননি। তিনি তাদের প্রত্যেককে বিষাক্ত ডেথ ক্যাপ মাশরুম দেওয়া গরুর মাংসের পদ বিফ ওয়েলিংটন পরিবেশন করেছিলেন।

শাশুড়ি গালি প্যাটারসন, শ্বশুর ডনাল্ড প্যাটারসন, খালা শাশুড়ি হেদার উইলকিনসনকে হত্যার দায়ে জুলাইয়েই এরিন দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।

মাশরুম খাইয়ে শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়দের হত্যার এ ঘটনা ‘লিয়েনগাথা মাশরুম খুন’ নামে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছে।

জুরিরা ৫০ বছর বয়সী এরিনকে খালু শ্বশুর ইয়ান উইলকিনসনকে হত্যাচেষ্টার দায়েও দোষী সাব্যস্ত করেছেন। ইয়ানও ওই বিষাক্ত মাশরুম দেওয়া খাবার খেয়েছিলেন। এ চারজনই এরিনের লিয়েনগাথার বাড়িতে ২০২৩ সালের ২৯ জুলাই দুপুরে খেতে গিয়েছিলেন।

সম্পর্কে ভাঙন ধরায় এরিন ও তার স্বামী সাইমন প্যাটারসন ওই ঘটনার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই আলাদা থাকছিলেন। সেদিনের দাওয়াতে সাইমনকেও থাকতে বলেছিলেন এরিন। কিন্তু সাইমন রাজি হননি। এই দম্পতির দু’টি সন্তান আছে।

মেলবোর্নের ১৩৫ কিলোমিটার দক্ষিপূর্বে অবস্থিত ছোট শহর লিয়েনগাথায় বাসিন্দার সংখ্যা ৬ হাজারের মতো।

বিচারক ক্রিস্টোফার বিল বলেছেন, হত্যাকাণ্ড ঘটাতে সুচতুর পরিকল্পনা এবং এই ঘটনায় এরিনের অনুতাপহীন মনোভাবের কারণে তার সাজা দীর্ঘ হওয়া উচিত।

“আপনার অপরাধের ভয়াবহ প্রভাব কেবল যারা হতাহত হয়েছে তাদের ওপরই পড়েনি, অসংখ্য মানুষের ক্ষতি করেছে।

“আপনি কেবল তিনটি জীবনই কেড়ে নেননি, ইয়ান উইলকিনসনের স্বাস্থ্যের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি এবং বৃহত্তর প্যাটারসন-উইলকিনসন পরিবারকে নিঃশেষ করে দেননি, আপনি নিজের সন্তানদেরও অকথ্য কষ্ট দিয়েছেন, তাদের কাছ থেকে তাদের প্রিয় দাদা-দাদিকে ছিনিয়ে নিয়েছেন,” মেলবোর্নের ভিক্টোরিয়া সুপ্রিম কোর্টে সাজা ঘোষণার সময় বলেন বিল।

বিচার চলাকালে কারাগারে থাকা সময় বাদ দিলে এরিনকে তার বয়স ৮২ হওয়া পর্যন্ত টানা কারাগারে থাকতে হবে, ওই সময়ে তার জামিন বা মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে।

শুরু থেকেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসা এরিন বলছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে নয়, দুর্ঘটনাবশত ওই বিষাক্ত মাশরুম খাবারে যুক্ত হয়েছিল।

রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে তিনি ২৮ দিন সময় পাবেন, যদিও তিনি এ সুযোগ নেবেন কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।

এরিনকে প্যারোলে মুক্তির সুযোগ ছাড়াই ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, ভিক্টোরিয়ায় খুনের দায়ে কোনো নারীর এটাই সর্বোচ্চ সাজা।

অস্ট্রেলিয়ায় তার চেয়ে বেশি সাজা পাওয়া এক নারীকে প্যারোলের সুযোগ ছাড়াই আজীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের বিধান নেই।

Link copied!