সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫, ১২:৫৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
নেপালের বিলুপ্ত পার্লামেন্ট পুনর্বহালের জন্য প্রেসিডেন্টের কাছে দাবি জানিয়েছে দেশটির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। দুর্নীতিবিরোধী প্রাণঘাতী প্রতিবাদের পর পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
বিবিসি জানিয়েছে, নেপালি কংগ্রেস, সিপিএম-ইউএমএল এবং মাওইস্ট সেন্টারসহ আটটি রাজনৈতিক দল এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌডেল অসাংবিধানিক কাজ করেছেন।
নতুন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান সুশীলা কার্কির সুপারিশের ভিত্তিতে শুক্রবার প্রেসিডেন্ট পৌডেল পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। এটি নেপালের তরুণ আন্দোলনকারীদের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল।
পার্লামেন্ট পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে দেওয়া বিবৃতিতে প্রধান আট দলের চিফ হুইপরা স্বাক্ষর করেছেন। তারা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা অসাংবিধানিক এবং নেপালের বিচার বিভাগের স্থাপিত নজির লংঘন করেছে।
তারা আরও বলেছে, আগামী বছরের ৫ মার্চের ঘোষিত নতুন নির্বাচনসহ আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।
শনিবার পরবর্তী সময়ে প্রেসিডেন্ট পৌডেল সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শন করে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “অনেক কঠিন এবং ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে শান্তিপূর্ণ সমাধন অর্জিত হচ্ছে। সংবিধান সচল আছে, পার্লামেন্টারি পদ্ধতি সচল আছে এবং ফেডারেল গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র এখনও বহাল আছে। ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জনগণের আরও কার্যকর গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে।”
নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকে গত সোমবার ‘জেন-জি’ গোষ্ঠীগুলোর ডাকা বিক্ষোভ শেষ পর্যন্ত সহিংসতায় গড়ায় এবং ১৯ জন নিহত হওয়ার পর সামাজিক মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু টানা বিক্ষোভ ও সহিংসতার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি সরকারের পতন হয়।
দেশটির পুলিশের দেওয়া সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ-সহিংসতায় এক ভারতীয় নাগরিকসহ অন্তত ৫১ জন নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার নেপালের জেন-জি আন্দোলনকারী, প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌডেল এবং সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেলের মধ্যে আলোচনায় মতৈক্য হওয়ার পরই সাবেক প্রধান বিচারপতি কার্কিকে প্রধানমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত হয়।
কার্কি দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর হওয়ার একদিন পর শনিবার কর্তৃপক্ষ কাঠমান্ডু উপত্যকা ও দেশের অন্যান্য অংশ থেকে কারফিউ প্রত্যাহার করে নেয়। এ ঘোষণায় কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর দোকানপাট, সবজি বাজার ও শপিং মল খুলেছে, রাস্তায় ফের গাড়ির জট দেখা গেছে। দূরপাল্লার গাড়িও ছাড়ছে। অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা পেরিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে নেপাল।