অক্টোবর ১৪, ২০২৩, ০১:৩০ পিএম
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্দেশে গাজার বাসিন্দাদের উত্তর থেকে দক্ষিণে স্থানান্তর অত্যন্ত বিপজ্জনক।
কয়েক দিনের বিমান হামলার পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজা সিটি ও এর আশেপাশের ফিলিস্তিনিদের ওই অঞ্চলের দক্ষিণে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে উল্লেখ করে গুতরেস বলেন, ‘খাবার, পানি বা বাসস্থান নেই- অবরুদ্ধ করে রাখা এমন অঞ্চলে ঘনবসতিপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্রের ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে স্থানান্তরিত করা অত্যন্ত বিপজ্জন এবং কিছু ক্ষেত্রে অসম্ভবও।’
গাজার দক্ষিণাঞ্চলের হাসপাতালগুলো ইতোমধ্যে পূর্ণ হয়েছে এবং উত্তরাঞ্চল থেকে যাওয়া হাজার হাজার নতুন রোগী গ্রহণ করতে পারবে না। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে। মর্গগুলো উপচে পড়ছে; দায়িত্ব পালনকালে ১১ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে যাওয়ার আগে তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৩৪টি হামলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গাজার অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং বিদ্যুৎ পাম্প ও ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ না থাকায় পুরো এলাকা পানি সংকটের সম্মুখীন হয়েছে।
গুতেরেস বলেন, গাজার পরিস্থিতি একটি বিপজ্জনক নতুন নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, শনিবার ইসরায়েলে হামাসের ভয়াবহ আকস্মিক হামলায় এক হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার আহত হয়েছে এবং গাজায় ইসরায়েলের তীব্র বোমা বর্ষণে ইতিমধ্যে এক হাজার ৮০০ জন নিহত এবং হাজার হাজার আহত হয়েছেন।
গুতেরেস গাজায় অবিলম্বে মানবিক প্রবেশাধিকারের আহ্বান জানিয়েছেন যাতে জ্বালানি, খাদ্য এবং পানি সংকটে থাকা লোকদের সরবরাহ করা যায়। তিনি আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও মানবাধিকার আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার আহ্বান জানান। অবিলম্বে গাজায় জিম্মিদের মুক্তিরও আহ্বান জানান তিনি।
গুতেরেস বলেন, ‘এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের জন্য সব পক্ষ এবং তাদের ওপর যাদের প্রভাব রয়েছে, তাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করা জরুরি।’
জাতিসংঘ মহাসচিব মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বজুড়ে সংঘাতের কারণে বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধেও সতর্ক করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সহিংসতাকে উস্কে দেয় এমন অমানবিক ভাষা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি সকল নেতাদেরকে ইহুদিবিদ্বেষ, মুসলিমবিদ্বেষ গোঁড়ামি এবং সব ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং মৃত্যু ও ধ্বংসের এই অন্তহীন চক্রের স্থায়ী সমাধান খুঁজতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একত্রিত হওয়ার এখনই সময়।’