আগস্ট ৮, ২০২৫, ১২:১৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ভেনজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ‘বিশ্বের অন্যতম বড় মাদক চোরাকারবারি’ অ্যাখ্যা দিয়ে তাকে ধরিয়ে দেওয়ার পুরস্কার বাড়িয়ে ৫ কোটি ডলার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিবিসি লিখেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বহুদিন ধরেই মাদুরোর সমালোচক। ব্যাপক ভোট কারচুপির বিতর্কিত নির্বাচন শেষে জানুয়ারিতে ফের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন মাদুরো। সেই নির্বাচনের ফল প্রত্যাখান করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় অংশ।
মাদুরো ‘সরাসরি মাদক চোরাচালানে জড়িত’ মন্তব্য করে মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি বলেন, পূর্বে ঘোষিত আড়াই কোটি ডলারের পুরস্কারকে দ্বিগুণ করে ৫ কোটি ডলার করা হয়েছে।
বন্ডির অভিযোগের বিষয়ে ভেনেজুয়েলা সরকার প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও মাদুরো সবসময়ই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র সরকার মাদুরো এবং তার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মাদক-সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদক চোরাচালানের অভিযোগ তোলে।
তখন মার্কিন বিচার বিভাগ দাবি করেছিল, মাদুরো কলম্বিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী ফার্কের সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ডুবাতে’ কোকেনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছিলেন।
বন্ডি বৃহস্পতিবার এক্স ভিডিও পোস্টে বলেন, ভেনেজুয়েলার অপরাধী চক্র ট্রেন দে আরাগুয়া (ট্রাম্প প্রশাসনের চোখে সন্ত্রাসী সংগঠন), মেক্সিকোভিত্তিক অপরাধী চক্র সিনালোয়া কার্টেলের সঙ্গে সমন্বয় করে চলেন মাদুরো।
বন্ডি দাবি করেন, মাদুরো ও সহযোগীদের সম্পৃক্ততা আছে- এমন ৩০ টন কোকেন জব্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিইএ), যার মধ্যে ৭ টনের সঙ্গে মাদুরোর সরাসরি সম্পৃক্ততা আছে।
মাদুরো এর আগে মাদকের কারবার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
বিবিসি লিখেছে, বন্ডির মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলা সরকারের দীর্ঘদিনের উত্তেজনারই ধারবাহিকতা। তবে দ্বিগুণ ঘোষিত এ পুরস্কার কীভাবে কাজে দেবে তার ইঙ্গিত দেননি অ্যাটর্নি জেনারেল।
২০১৩ সালে উগো চাবেসের মৃত্যুর পর ইউনাইটেড সোশালিস্ট পার্টির নেতা হিসেবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন মাদুরো। তার বিরুদ্ধে সহিংসভাবে বিরোধী দল ও ভিন্নমত দমনের অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার।
গত বছরের বিতর্কিত নির্বাচনের পর বিক্ষোভের মুখেও মাদুরো ক্ষমতা ধরে রেখেছেন।
ভেনেজুয়েলার সাবেক সামরিক গোয়েন্দা প্রধান উগো কারবাহান মাদ্রিদে গ্রেপ্তার হওয়ার পর গত জুনে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে একাধিক মাদক মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
‘ভয়ংকর’ গোয়েন্দাপ্রধান হিসেবে পরিচিত কারবাহান ‘এল পলো’ বা ‘দ্য চিকেন’ নামেও কুখ্যাত ছিলেন। তবে বিরোধী প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে মাদুরোকে উৎখাতের জন্য সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানোর পর তিনি দেশ ছাড়েন।
বিবিসি লিখেছে, কারবাহান শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে দোষ স্বীকার করেন। ধারণা করা হচ্ছে তিনি হয়ত কম শাস্তির বিনিময়ে মাদুরোর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে রাজি হয়েছেন।
এ বছরের শুরুতে মাদুরো ফের ক্ষমতায় বসার পর তার সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।