ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা এ কথা জানিয়ে বলেছেন, ‘‘বুধবার সন্ধ্যায় সনিয়া গাঁধীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তবে মৃদু জ্বর থাকলেও তাঁর শরীরে গুরুতর উপসর্গ নেই।’’ কংগ্রেস সভানেত্রী বর্তমানে বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন বলেও তিনি জানান।
আনন্দবাজারসহ একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন আগেই জয়পুরের চিন্তন শিবিরে হাজির ছিলেন সোনিয়া। ফেরার পর থেকে একের পর এক কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরেছেন তিনি। এর মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় হালকা জ্বর এসেছিল সোনিয়ার। অন্যান্য উপসর্গও ছিল। চিকিৎসক পরীক্ষা করতেই করোনা ধরা পড়ে।
এদিকে, বহুল আলোচিত ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় বেআইনিভাবে অর্থ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জড়িত থাকার অভিযোগে আগামী ৮ জুন তলব করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গতকাল বুধবার নোটিস সোনিয়া গান্ধীকে ওই নোটিশ পাঠানো হয়। ওই নোটিশ পাঠানোর পরের দিনই করোনায় আক্রান্ত হলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের প্রধান।
বুধবার পৃথক নোটিশে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২ জুন তলব করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। গতকাল বুধবার পাঠানো নোটিশে রাহুল গান্ধীকে বৃহস্পতিবার ইডি-র দফতরে হাজির হতে বলা হয়েছিল। তবে দেশে না থাকায় তিনি ডেতে পারেননি।
করোনাভাইরাসে শনাক্ত হওয়ার আগে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বুধবার বলা হয়, সোনিয়া গান্ধী অবশ্যই ৮ জুন ইডি দফতরে উপস্থিত থাকবেন। আর রাহুল বর্তমানে দেশে না থাকায় তিনি যেতে পারবেন ৫ জুনের পর।
প্রসঙ্গত, রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধীর মালিকানাধীন ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি সংস্থা ২০১১ সালে ন্যাশনাল হেরাল্ড, কোয়াম-ই-আওয়াজ এবং নবজীবন–এই তিনটি সংবাদপত্র ‘অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেডে’র কাছ থেকে অধিগ্রহণ করে। রাহুল গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধী একাই ওই সংস্থার ৭৬ শতাংশ শেয়ারের মালিক। বাকি দুই শেয়ার হোল্ডার হলেন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা অস্কার ফার্নান্ডেজ ও মতিলাল ভোরা।
সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর অভিযোগ ছিল, ওই অধিগ্রহণ নিয়ম মেনে হয়নি। ঘুরপথে মাত্র ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে ‘অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেডের’ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়ে গেছে কংগ্রেসের ফার্স্ট ফ্যামিলি পরিচালিত ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’। এ অভিযোগে সোনিয়া ও রাহুলকে তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
তবে কংগ্রেসের যুক্তি হল অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেডের থেকে ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেডে (ওয়াইআইএল) শেয়ার ট্রান্সফার একেবারেই নিয়ম মেনে হয়েছে। শুধু তাই নয়, ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ব্যবসায়ী সংস্থা নয়। সুতরাং তাঁদের লাভ বা লোকসানের কোনও প্রশ্নই উঠছে না।