আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) খোরাসান প্রদেশ শাখা। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম রয়টার্সের এক খবরে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবারের ভয়াবহ ওই জোড়া বিস্ফোরণে ১৩ মার্কিন সেনাসহ অন্তত ১০৩ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
আইএসের বিবৃতিতে বলা হয়, আইএস-এর একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সঙ্গে থাকা অনুবাদক ও সহযোগীদের লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
এসময় এক সন্ত্রাসীর ছবি প্রকাশ করা হয়। ওই ছবিতে দেখা যায়, আইএসের কালো রঙের পতাকার সামনে বিস্ফোরক বেল্ট পরে দাঁড়িয়ে আছে সেই সন্ত্রাসী। তার মুখমণ্ডলও কালো কাপড়ে ঢাকা। কেবল চোখই দেখা যাচ্ছিল। হামলাকারীর নাম আবদুল রহমান আল-লোগারি বলে উল্লেখ করেছে আইএস। নাম থেকে মনে করা হচ্ছে, হামলাকারী আফগান ছিলেন।
আইএসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিস্ফোরক বেল্ট পরিহিত ওই সন্ত্রাসী তালেবান নিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তা চৌকি পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা, দোভাষী ও সহযোগীদের জটলার পাঁচ মিটারের মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং বিস্ফোরণ ঘটায়। এ বিস্ফোরণে হতাহতদের মধ্যে তালেবান সদস্যরাও আছেন।
এর আগে এই বিস্ফোরণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও আইএসকেই দায়ী করেছে। ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর হোয়াইট হাউজে ব্রিফিংকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হামলাকারীদের খুঁজে বের করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী হামলাকারীদের কোন ছাড় দেবে না যুক্তরাষ্ট্র।
তালেবানের সঙ্গে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি হয়। এরপর আফগানিস্তানে এই প্রথম মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটল। এছাড়া ২০১১ সালের পর আফগানিস্তানে এক ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মার্কিন সেনা নিহতের ঘটনা এটি। ওই বছর আগস্টে আফগানিস্তানে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ৩০ মার্কিন সেনা নিহত হয়েছিলেন।
এদিকে তালেবানও এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, মার্কিন সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা স্থানে বিদেশি সেনাদের উপস্থিতিতে এ হামলা হয়েছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত বেসামরিক আফগানদের লক্ষ্য করে চালানো এই হামলার নিন্দা জানানো।
বিস্ফোরণের পর যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল ম্যাককেঞ্জি বলেছেন, আফগানিস্তানে এখনো প্রায় এক হাজার মার্কিন নাগরিক রয়েছে। তাই তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং এ বিষয়ের ওপর তারা গুরুত্ব দিচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্স, এপি।