যুক্তরাষ্ট্রে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিতে আলোচনায় বসতে বরাবরই আগ্রহ প্রকাশ করে করে আসছে বাইডেন প্রশাসন। সম্প্রতি পরমাণু চুক্তির বিষয়টি এগিয়ে নিতে ইউরোপের মধ্যস্থতায় ইরানকে আলোচনায় বসার আহ্বানও জানানো হয়।
তবে পরমাণু চুক্তিতে ফেরার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার শর্ত দিয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আমেরিকা তাদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা না তুললে তারা কোনো রকম আলোচনায় বসবে না।
২০১৮ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের সঙ্গে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর পরমাণু বিষয়ক চুক্তি থেকে বের করে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এরপরই পরমাণু চুক্তির বিষয়ে স্থবিরতা দেখা দেয়। ট্রাম্প সেসময় ইরানের ওপর কড়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এখন ২০১৫ সালের সেই চুক্তিতে ফিরতে চাইছেন। ওয়াশিংটন বলছে, তেহরানকে অবশ্যই চুক্তির পূর্ণাঙ্গ মেনে চলা শুরু করতে হবে। উল্টোদিকে তেহরান বলছে, এটা একমাত্র তখনই সম্ভব যখন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর জারি করা সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।
ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিক ও নেতাদের সঙ্গে তাদের আলোচনা জারি থাকবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, রাশিয়া, ফ্রান্সের মতো দেশগুলির সঙ্গে আলোচনায় তাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার টেবিলে বসতে চাইলে আগে তাদের নিষেধাজ্ঞা তুলতে হবে।
ইরানের এই চাপের সামনে মার্কিন প্রমাসন কী কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষায়। কারণ, পরমাণু চুক্তিতে ফেরার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উপর আগেই চাপ তৈরি করেছিল ইইউ।
পরমাণু চুক্তির সমঝোতায় পৌঁছাতে ইরানের ৭ শর্ত:
ইরানের প্রথম শর্ত হচ্ছে তেহরান ওয়াশিংটনের আরোপিত সব ধরনের অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।
যে ৬টি শক্তিশালী রাষ্ট্র অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি ও ব্রিটেন এবং জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পারমাণবিক সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল তা অব্যাহত থাকুক চায় ইরান।
যেসব বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দ নয় তা দাপ্তরিক কমিটির মাধ্যমেই দর কষাকষির মধ্য দিয়ে সমাধান হবে।
একতরফাভাবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে সরে যাওয়ায় ইরান যে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
পারমাণবিক সমঝোতা চুক্তির সঙ্গে ইরানের প্রতিরক্ষা ইস্যু বা ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির বিষয়টি যুক্ত করা যাবে না। ইরানের পররাষ্ট্রনীতিকেও নয়।
নতুন কোনো দেশ বা উপসাগরীয় দেশ এ চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না।
এছাড়া ইসরাইল ও ফিলিস্তিন দুই পৃথক রাষ্ট্রের সমাধান নয় বরং জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে ইস্যুটির সমাধান চায় ইরান।