মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগী আফগানদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আগস্ট ২৫, ২০২১, ০৯:৫৫ পিএম

মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগী আফগানদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগ

রাজধানী কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক আফগানদের কাছ থেকে মার্কিন সেনারা চাঁদা তুলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করার পর আফগান নাগরিকের মধ্যে দেশত্যাগের হিড়িক পড়ে যায়। এই সুযোগে বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রন থাকা  মার্কিন সেনারা আফগান নাগরিকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক অর্থ আদায় করে নিচ্ছে বলে বেশ কিছু গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে।

দেশত্যাগকারী আফগান নাগরিকদের উদ্ধৃতি দিয়ে ইরানি বার্তা সংস্থা ‘নূর নিউজ’ ও পার্সটুডের খবরে বলা হয়, কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে মার্কিন মেরিন সেনারা  দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক আফগানদের বিদেশগামী বিমানে উঠিয়ে দিতে সহযোগিতা করার জন্য একেকজনের কাছ থেকে সুবিধামতো ৫০০ থেকে ২,০০০ ডলার পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে।  যারা চাঁদা দিতে পারছে না তাদেরকে মার্কিন সেনারা কোনোভাবেই বিমানবন্দরে ঢুকতে দিচ্ছে না বলেও খবরে বলা হয়।  

এদিকে, হুড়োহুড়ি করে দেশত্যাগ না করতে আফগান জনগণের  প্রতি আবহবান জানিয়েছে তালেবান প্রশাসন। তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো আফগান নাগরিকদের নিয়ে তাদেরকে নীচু মানের কাজে নিয়োগ দেবে। আফগানিস্তানের জনগণকে দেশত্যাগে উৎসাহিত না করতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দ্বিতীয়বারের মতো সংবাদ সম্মেলনে এসে তালেবান মুখপাত্র আরও বলেন, “আমরা আমেরিকাকে বলে দিয়েছি তারা যেন আফগান নাগরিকদের দেশত্যাগ উৎসাহ না দেয়। কারণ, আমাদের নাগরিকদেরকে নিয়ে তারা নীচু মানের কাজে নিয়োগ দেবে।”

তালেবান মুখপাত্র সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আফগানিস্তানে বিদেশি মিশনগুলোর নিরাপত্তা রক্ষা করার দায়িত্ব আমরা নিয়েছি এবং সব বিদেশি কূটনীতিক নির্ভয়ে তাদের কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।

তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ। ছবি: সংগৃহীত

মুজাহিদ বলেন, তালেবান এখনো সরকার গঠন না করলেও সব সরকারি অফিস-আদালত খুলে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সব ধরনের ব্যাংক আজ-কালের মধ্যে খুলে যাবে এবং সব ধরনের অর্থনৈতিক তৎপরতা আগের মতো স্বাভাবিকভাবে চলবে।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালে যুত্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর হামলার মুখে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের পতন ঘটে। তারপর দেশটিতে অবস্থান করে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আফগানিস্তান থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহারের  ঘোষণা দেওয়ার পরই তালেবান সশস্র যুদ্ধ শুরু করে। তাদের হামলায় টিকতে না পেরে আফগান সরকারের একের পর এক প্রদেশ হাতছাড়া হয়ে যায়। সবশেষ গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান।এরপরই  মূলত আফগানদের মধ্যে দেশত্যাগের হিড়িক পড়ে যায়।

Link copied!