রাজধানী মস্কো অভিমুখে যাত্রা থেকে সদস্যদের ফেরত আসার নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ভাগনার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন।
শনিবার বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সাথে আলোচনার পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন ভাগনার প্রধান।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, রক্তপাত এড়াতে ভাগনার যোদ্ধাদের মস্কোর দিকে অগ্রসর না হয়ে ফেরত আসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রিগোজিন। তাদের নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরতে বলা হয়েছে।
লুকাশেঙ্কোর প্রেস সার্ভিসের বরাতে রাশিয়া ২৪ জানিয়েছে, রাশিয়ার অভ্যন্তরে ভাগনার সেনাদের বিদ্রোহ যাত্রা বন্ধের বিষয়ে লুকাশেঙ্কোর প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন প্রিগোজিন। একইসঙ্গে উত্তেজনা নিরসনে বেশকিছু পদক্ষেপও নিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি আলোচনায় শর্ত দিয়েছেন ভাগনারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভাগনার প্রধানের এই শর্ত মেনে নিয়েছেন বলে জানিয়েছে রাশিয়া ২৪। তবে এই বিষয়ে ক্রেমলিনের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে, শনিবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটার দিকে সিএনএন ও বিবিসির খবরে বলা হয়, মস্কো থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে লিপেতস্ক অঞ্চলে রয়েছে অবস্থান করছে ভাগনার যোদ্ধারা।
বিবিসির যাচাইকৃত সোশ্যাল মিডিয়ার এক ভিডিওতে দেখা যায়, ভাগনারের একটি গাড়ির বহর লিপেতস্ক অঞ্চল দিয়ে যাচ্ছে। এই অঞ্চলটি ভরোনেজ ও মস্কোর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।
গভর্নর আর্তমনোভ জানান, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে স্থানীয়দের বাড়িতে থাকতে এবং সড়ক পথে যাতায়াত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
রুশ সংবাদমাধ্যম ভেদোমস্তি প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, যুদ্ধের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও সরঞ্জামসহ রাশিয়ার নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে মস্কোর সংযোগকারী স্থানে অবস্থান নিচ্ছে। ছবিতে আকাশে হেলিকপ্টার ও কাছে পুলিশ ট্রাক দেখা গেছে।
এর আগে ভাগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন দাবি করেছিলেন, তার যোদ্ধারা রোস্তভ-অন-ডন শহরটির সেনা সদর দফতর নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে সকালে একটি ভিডিও বার্তার পর তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, ভাগনার যোদ্ধাদের ওপর রুশ সেনারা হামলা চালিয়েছে অভিযোগ তুলে শুক্রবার রাতে রুশ সামরিক নেতাদের উৎখাত করার ঘোষণা দেন ভাগনার প্রধান প্রিগোজিন। বিদ্রোহ ঘোষণার পর মস্কোর অদূরবর্তী দুটি শহর ও একটি সেনা সদর দখলে নিয়েছে ভাগনার বাহিনী। এরপরই তিনি বাহিনী নিয়ে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় প্রবেশ করে রোস্তভ শহরের সামরিক অবকাঠামো নিয়ন্ত্রণের দাবি করেছেন। মস্কো অভিমুখে এগিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে প্রিগোজিনকে ‘সশস্ত্র বিদ্রোহী’ আখ্যা দেয় মস্কো। তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১২ থেকে ২০ বছরের সাজা হতে পারে প্রিগোজিনের।