জানুয়ারি ৯, ২০২৩, ১০:৪৯ এএম
২০২১ সালের ৬ জানুয়ারিতে মার্কিন পার্লামেন্ট ‘ক্যাপিটাল হিলে’ হামলা করেছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকরা। এবার ব্রাজিলেও ঘটলো তেমনই ঘটনা। ল্যাটিন আমেরিকার দেশটির কংগ্রেস ভবন, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ এবং সুপ্রিমকোর্ট দখল করে নিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর সমর্থকরা।
রোববার (৮ জানুয়ারি) এই ঘটনার পর দেশটির ফেডারেল বাহিনীকে রাজধানীর নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভা।
বোলসোনারোর সমর্থকরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দরজা-জানালায় ভাঙচুর চালিয়েছে। ঘরের আসবাবপত্র ভাঙা জানালা দিয়ে বাইরে ছুড়ে ফেলেছে। সুপ্রিমকোর্টের এজলাস কক্ষকে দুমড়েমুচড়ে দিয়েছে। স্প্রিঙ্কলার সিস্টেমের সাহায্যে কংগ্রেস ভবনের একটি অংশ ডুবিয়ে দিয়েছে।
বোলসোনারোকে হারিয়ে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি তৃতীয়বারের মতো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন লুলা ডা সিলভা। এ হামলার উসকানিদাতা হিসেবে বোলসোনারোকেই দায়ী করে লুলা ডা সিলভা দাবি করেন, সর্বশেষ নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে নতুন করে নির্বাচন দাবি করার জন্য বোলসোনারো তাঁর সমর্থকদের উত্তেজিত করেছেন।
এ ঘটনার পর এক সংবাদ সম্মেলনে লুলা বলেছেন, এ দুর্বৃত্তরা যাদের আমরা বলতে পারি উন্মাদ-ফ্যাসিস্ট, তারা এমন কাজ করেছে, যা আমাদের দেশের ইতিহাসে কখনই ঘটেনি। সাও পাওলোতে ভ্রমণে থাকা লুলা আরও বলেন, যেসব লোক এ কাজ করেছে, তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।
এ ঘটনার পর পরই রাজধানী ব্রাসিলিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিতে দেশটির ফেডারেল বাহিনীকে তলব করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভা। আপাতত আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের রাজধানীর নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সময় আরও বাড়ানো হতে পারে।
বলসোনারোর রাজনৈতিক দল লিবারেল পার্টির প্রধান ভলদেমার কস্তা নেতো এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আজকের দিনটি ব্রাজিলীয়দের জন্য একটি দুঃখের দিন।’
এদিকে এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে অন্তত ৪০০ ব্যক্তিকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাজিলের ফেডারেল ডিস্ট্রিক্টের গভর্নর ইবানেইস রোচা এক টুইটে লিখেছেন, ‘গ্রেফতারকৃতদের অবশ্যই তাদের কৃতকর্মের ফল ভোগ করতে হবে।’
রোচা আরও বলেছেন, ‘রোববার বিকেলে সন্ত্রাসবাদী ঘটনায় যারা অংশগ্রহণ করেছিল তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
সোমবার (৯ জানুয়ারি) সকালে হামলাকারীদের সরিয়ে দিতে সমর্থ হয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এ সময় ৪ শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে বিগত কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণার মাধ্যমেই এ হামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল, সেখানে কি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দাঙ্গাকারীদের বিরুদ্ধে শুরুতেই ব্যবস্থা নিতে পারলো না?