শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ৫, ২০২৩, ০৩:৩০ পিএম

শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা

ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শহীদ শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে তাঁর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।

শনিবার (৫ আগস্ট) সকাল ৮টায় ধানমন্ডির আবাহনী ক্লাব প্রাঙ্গণে শহীদ শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম উপস্থিত ছিলেন। েশ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।

আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সহযোগি সংগঠন আওয়ামী যুবলীগ, কৃষক লীগ, মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানায়।

শেখ কামালের জন্ম দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপিত হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারের সব দফতরে যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালিত হচ্ছে।

১৯৪৯ সালের এই দিনে তিনি তদানীন্তন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বিপথগামী একদল সেনাকর্মকর্তার নির্মম বুলেটে মাত্র ২৬ বছর বয়সে শাহাদাতবরণ করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী:

শহীদ শেখ কামালের জন্মদিন পালন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁর বাণীতে বলেন, “বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী। তিনি একাধারে ছিলেন দেশের সেরা ক্রীড়া সংগঠক, ক্রীড়াবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, এছাড়া ছাত্র হিসেবেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। মহান মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন থেকে ফিরে এসে তিনি বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আত্মনিয়োগ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীড়া জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। দেশ স্বাধীনের আগেই তিনি আবাহনী সমাজকল্যাণ সংস্থা গঠন করেন। তিনি খেলোয়াড়দের স্বাবলম্বী করার নানা উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি তাদের অবসর ভাতা প্রদানেরও পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সে লক্ষ্যে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা অনুদান নিয়ে ‘খেলোয়াড় কল্যাণ তহবিল’ গঠন করেন।

দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি:

শেখ কামালের জন্মদিন পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন ক্রীড়া ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করছে। আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠন শনিবার সকাল ৮টায় ধানমন্ডিস্থ আবাহনী ক্লাব প্রাঙ্গণে শহীদ শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও সকাল ৯টায় বনানী কররস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলেরও আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগি সংগঠনগুলো।

মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনে সকাল সাড়ে ৯টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও সিলমোহর অবমুক্ত করেন। সকাল ১০টায় তিনি ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। ওই অনুষ্ঠানে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার ২০২২ দেওয়া হবে। 

এছাড়া, শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এছাড়াও শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে বিকেল ৩ টায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শ্রমিক লীগের আলোচনা সভা রয়েছে। 

 বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শহীদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি এ অনার্স পাস করেন। বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গনের শিক্ষার অন্যতম উৎসমুখ ‘ছায়ানট’-এর সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

এছাড়া, শেখ কামাল  ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনেতা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে সুপরিচিত ছিলেন। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধূলায় বেশ উৎসাহ ছিল তাঁর। শেখ কামাল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশনন্ড লাভ ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন এবং শাহাদাত বরণের সময় বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন জাতীয় ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের এমএ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী।

Link copied!