বেটা
গোলাম মোহাম্মদ ইদু।
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, শিল্পী-সংগ্রামী গোলাম মোহাম্মদ ইদু আর নেই।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গোলাম মোহাম্মদ ইদুর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে জানান, গোলাম মোহাম্মদ ইদুর মৃত্যুতে একজন অভিভাবককে হারাল দেশ-বিদেশে উদীচীর লাখো শিল্পী-কর্মী।
আজীবন বিপ্লবী এই মানুষটির মৃত্যুতে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গণেরও অনেক বড় ক্ষতি হলো বলে মন্তব্য করেন তারা।
উদীচীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে উদীচী প্রতিষ্ঠিত হওয়ারও প্রায় এক দশক আগে থেকে শিল্পী-সংগ্রামী-কৃষক নেতা সত্যেন সেন একটি গানের দল গঠন করেন। সেই গানের দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন গোলাম মোহাম্মদ ইদু। পরবর্তীতে ১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর উদীচী আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হলে প্রথম আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য নির্বাচিত হন গোলাম মোহাম্মদ ইদু।
২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
উদীচী জানিয়েছে, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন গোলাম মোহাম্মদ ইদু। জীবনের একটি দীর্ঘসময় তাকে কারান্তরীণ থাকতে হয়েছে। তারপরও নিজের দায়িত্ব-কর্তব্য থেকে কখনো পিছপা হননি।
শেষ বয়সে শারীরিক নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও উদীচীর ছোট-বড় যেকোনো কর্মসূচিতে ছুটে আসতেন তিনি। সংগঠনের সব বয়সী শিল্পী-কর্মীর জন্যই তিনি প্রকৃত অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।
১৯৩৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেওয়া গোলাম মোহাম্মদ ইদু দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের জটিল রোগের সঙ্গে লড়াই করে আসছিলেন। গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে তাকে রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুই-তিনদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ২১ ডিসেম্বর বিকেলে তাকে আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
তবে, শুক্রবার বিকেলে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
