পরিবেশ নিয়ে কথা বলতে গেলাম, স্নেহের তাপস ধোলাইখালে চুবাতে চাইলেন: সুলতানা কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩, ০৬:১১ এএম

পরিবেশ নিয়ে কথা বলতে গেলাম, স্নেহের তাপস ধোলাইখালে চুবাতে চাইলেন: সুলতানা কামাল

মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল

মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, আমরা যখন পরিবেশ নিয়ে কথা বলতে গেলাম, আমারই নির্বাচনী এলাকার মানুষ, অত্যন্ত স্নেহের পাত্র আমার, মেয়র তাপস; ছোটবেলা থেকে দেখেছি, কারণ, একই পাড়ায় তারা থেকেছে। আমরা সবাই যখন পরিবেশ নিয়ে কথা বলতে গেলাম, তিনি বললেন যে যদি বেশি কথা বলে ধোলাইখালে নিয়ে চুবাব।

সোমবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে সিটিজেন প্ল্যাটফর্মের ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন আখ্যান ও সমান্তরাল বাস্তবতা: পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ভাবনা’ শিরোনামের প্রকাশনা উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সুলতানা কামাল মনে করেন, ‘চুবানোর সংস্কৃতি কিন্তু শেখ ফজলে নূর তাপসের একার মধ্যে নেই। অনেকের মধ্যেই আছে। এখন কথা বলতে গেলে যদি চুবানোর ধমক খেতে হয়, আসলে কোন রাজনীতিকের কাছে যাব?’

সুলতানা কামাল বলেন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকা প্রয়োজন। রাজনৈতিক সদিচ্ছা আসবে রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে। কিন্তু রাজনীতিবিদেরা কোথায়? তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায় না। যারা জনপ্রতিনিধি হবেন, তাদের সঙ্গে জনসাধারণের সংযোগ না থাকলে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হবে না। তাদের জনগণের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিতে হবে।

সুলতানা কামাল বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নাকি এত উন্নতি হয়েছে যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রশংসা করেছে। কিন্তু যারই অসুখ হচ্ছে এবং একটু সামর্থ্য আছে, দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন। তাহলে কাদের জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি হলো এবং কী এমন উন্নতি হলো যে বাইরে চলে যেতে হয়।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক রেহমান সোবহান বর্তমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ব্যর্থতার দুটো দিক তুলে ধরেন। তার মতে, ব্যর্থতার একটি দিক হচ্ছে গণতান্ত্রিক ব্যর্থতা, যেখানে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার থাকা দরকার, কিন্তু নেই, যারা মানুষের কথা শুনবে ও কাজ করবে। আরেকটি দিক হচ্ছে, ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থার অভাব।

রেহমান সোবহান আরও বলেন, এই আলোচনায় যেসব সমস্যা চিহ্নিত হয়েছে, সেগুলো সমাধাযোগ্য। কিন্তু এখানে বিষয় হচ্ছে, এগুলো কতটা প্রাধান্য পাচ্ছে। এ ছাড়া বাস্তবায়নের সদিচ্ছা একটি বিষয়। দুর্নীতি, সুশাসনের মতো অনেক কিছু এখানে জড়িত।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বাংলাদেশে উন্নতি হয়েছে, কিন্তু তার ভাগীদার সবাই সমান নন। বৈষম্য বাড়ছে, যা শিক্ষা–স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলছে। দেশে ১০ শতাংশ মানুষের হাতে ৪১ শতাংশ সম্পদ। এখন অত্যন্ত বিত্তবানদের রাজনৈতিক ক্ষমতারও উদ্ভব ঘটছে, যা আগে ছিল না।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কথাসাহিত্যিক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, সাবেক বিচারপতি মো. আবদুল মতিনসহ অনেকে।

Link copied!