বিদ্যুৎ সঙ্কট ও সমাধান নিয়ে যা বললেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ৬, ২০২৩, ০৯:১৫ পিএম

বিদ্যুৎ সঙ্কট ও সমাধান নিয়ে যা বললেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। গতকাল সোমবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি একথা বলেন।

একটি পোস্টে তিনি অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিংয়ের পেছনে কতগুলো কারণ উল্লেখ করেছেন। বলেছেন  আসছে দু’সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।  দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের পাঠকদের জন্য তা হবহু তুলে ধরা হলো।

তীব্র গরম এবং সেইসাথে লোডশেডিং-এর কারণে সবার প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি কারোরই কাম্য নয়। অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিং এর পেছনে বেশকিছু কারণ আছে, যা সবারই জানা প্রয়োজন।

আপনাদের অজানা নয়, করোনা মহামারীর ধাক্কা, পরবর্তীতে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাস, কয়লা, ফার্নেস ওয়েল-সহ সকল প্রকার জ্বালানির মূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যায়, সেইসাথে প্রাপ্যতা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। যে সংকট এখনও চলমান।

অন্যদিকে, টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার বেড়েছে লাগামহীনভাবে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রাথমিক জ্বালানি যথা গ্যাস, কয়লা ও ফার্নেস ওয়েল আমদানিতে অনেকটা প্রভাব পড়েছে।ফলশ্রুতিতে বর্তমানের এই অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিং। তবে আমরা খুব দ্রুতই জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছি। আশা করি সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হবে।

আপনারা জানেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অবিচল নেতৃত্বে দিনরাত পরিশ্রম করে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। ২০০৮ সালেও মাত্র ৪৪ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেতেন, সেখানে আজ শতভাগ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। যা বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় নজিরবিহীন ঘটনা। শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে জাতীয় অর্থনীতি ও সকল ধরণের উৎপাদনে অভাবনীয় গতি এসেছে। এতে দেশজুড়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিগত এক যুগে আমরা দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি ৫ গুণেরও বেশি। বর্তমানে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ২৭,৩৬১ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভসহ)। ফলে উৎপাদন সক্ষমতার দিক থেকে বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারের নজিরবিহীন উর্ধ্বগতির কারণেই আমরা এই অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিং-এর কবলে পড়েছি।

আমি সর্বোপরি আপনাদের ভোগান্তিতে দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসাথে আশ্বস্ত করতে চাই, এ পরিস্থিতি সাময়িক। খুব দ্রুতই আমরা ভালো অবস্থায় ফিরে আসবো।

অনেকের মনে থাকবার কথা ২০০৮ সালের আগে সারাদেশে দিনে ১৬-১৮ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকতো না। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই কঠিন সময় পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। আশা করি আপনাদের সেই আস্থা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে। সবাই মিলে আমরা দ্রুততম সময়ে এই ভোগান্তি পাড়ি দিতে সমর্থ হবো।’

সোমবার সবশেষ পোস্টে তিনি বাংলাদেশে লোড শেডিংয়ের কারণ ও এথেকে সাধারণ মানুষ  কিভাবে পরিত্রাণ পাবে তা তুলে ধরেছেন।

বাংলাদেশে কেন হচ্ছে লোড শেডিং? কিভাবে পরিত্রাণ পাবে সাধারণ মানুষ?

তীব্র গরমে কষ্ট করছে বাংলাদেশের মানুষ।

একই সাথে বৈদ্যুতিক পাখা, এসি ও এয়ার কুলারের ব্যবহার বাড়ছে, মানুষ স্বস্তির জন্যই এসব যন্ত্রের মুখাপেক্ষী হচ্ছে বাধ্য হয়েই। গত ৩ জুন তারিখেও ১৩ হাজার ৬ শ ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে বাংলাদেশ, তারপরেও লোডশেডিং।

আওয়ামী লীগ সরকার এই দেশের সব গ্রামে, শহরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দিয়েছে, এই সরকার জনগণের সরকার, তাই জনগণের সহযোগিতা নিয়েই এই সঙ্কট মোকাবিলা করতে চায় সরকার।

বিএনপি জামাতের ৩০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতায় থাকলে আজকে দেশে কি অবস্থা হতো একবার চিন্তা করুন! যেখানে সাড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিয়েও দেশে লোডশেডিং করতে হচ্ছে, সেখানে ৩ হাজার মেগাওয়াটে কি পরিস্থিতি হতো আরেকবার ভাবুন।

আসুন যার যার যায়গা থেকে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করি।’

 

Link copied!