উজরা জেয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সুষ্ঠু নির্বাচন ‘নিশ্চিতেই রাজনীতি করছি’, আর ভোট ‘কারচুপি করে’ বিএনপি

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

জুলাই ১৩, ২০২৩, ১০:১১ পিএম

সুষ্ঠু নির্বাচন ‘নিশ্চিতেই রাজনীতি করছি’, আর ভোট ‘কারচুপি করে’ বিএনপি

ছবি: পিআইডি

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে বলে মার্কিন প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় সরকারপ্রধান বলেন, “অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ‘নিশ্চিত করতেই’ তিনি রাজনীতি করেন। অন্যদিকে ভোটে ‘কারচুপি করে’ বিএনপি।”

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বেসামরিক নিরাপত্তা বিষয়ক আন্ডারসেক্রেটারি উজরা জেয়ার সাথে সাক্ষাতকালে শেখ হাসিনা নির্বাচনের ব্যাপারে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে এসব কথা বলেন।

সরকারপ্রধান বলেন, “আমরা সবসময়ই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে লড়াই করেছি এবং ইতোমধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করেছি।”

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
তিনি জানান, উজরা জেয়া বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকারকে সহায়তা করতে তার দেশ নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে।

উজরা জেয়া এসময় আরও বলেন, “কোন দলের প্রতি আমাদের কোন পক্ষপাতিত্ব নেই। আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই।”

প্রেস সচিব জানান, উজরা জেয়ার সাথে সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “তিনি ব্যক্তিগতভাবে ছাত্রজীবন থেকে এবং এমনকি বঙ্গবন্ধু পরিবার ও আওয়ামী লীগ জনগণের অধিকারের জন্যে সবসময়ই লড়াই করেছে।
তিনি বলেন, “আমরা সবসময়ই জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকারের জন্যে লড়াই করেছি।”

সরকারপ্রধান আরও বলেন, বিএনপিই দেশে ভোট কারচুপি শুরু করেছিল, যা বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তন করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্যে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স চালু করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ২০১৩-১৫ সালে বিএনপি এবং তাদের মিত্রদের নৃশংসতা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এবং অগ্নিসংযোগের কথা স্মরণ করেন যাতে ৫শ লোক নিহত হয়েছিল।
তিনি তাঁর ওপর ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার কথাও উল্লেখ করেন, যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানব ঢাল তৈরি করে তাঁকে রক্ষা করেছিলেন।
সফররত মার্কিন বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি বলেছেন, তিনি ইতিমধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন এবং তাদের সাথে কথা বলেছেন।

তিনি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করার ওপর জোর দেন।
উজরা জেয়া উল্লেখ করেন যে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপারেশনাল খরচের জন্য প্রায় ৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার  দেবে।

বাংলাদেশে এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য তিনি শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

উজরা জেয়া প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের আর্থিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহযোগিতা করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে দেশের দুটি ভিন্ন স্থানে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, কিন্তু, এখন শিবিরগুলোতে মানব পাচার ও অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে-যা দেশের নিরাপত্তার জন্য খুবই উদ্বেগজনক।
শ্রম ইস্যু নিয়ে কথা বলার সময় উজরা জেয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্র শ্রম সংস্কার উদ্যোগে বাংলাদেশের সাথে একত্রে কাজ করবে।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, শ্রমিকদের মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে তিনি ব্যক্তিগতভাবে শিল্প মালিকদের উদ্বুদ্ধ করেছেন।

সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ডোনাল্ড লু ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!