আবারও প্রেমের টানে বাংলাদেশে ভিনদেশির আগমন ও পরিণয়। ফেসবুকে পরিচয়, প্রণয় উইচ্যাটে। আট মাস পর চীন থেকে প্রিয় মানুষের কাছে চলে এলেন বাংলাদেশে। পরিণয়ের বাঁধনে বাঁধা পড়লেন দুজনে।
ঈদুল আজহার পরদিন ঢাকায় বিয়ে করেন চীনের যুবক সাউই চুই (২৮) ও চুয়াডাঙ্গার মেয়ে ফারিয়া সুলতানা (২৫)। পরে গত সোমবার (১০ জুলাই) স্ত্রী ফারিয়ার সাথে শ্বশুরবাড়ি চুয়াডাঙ্গা যান সাউই চুই।
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামের সানোয়ার হোসেনের মেয়ে ফারিয়া সুলতানা ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। সেই কারণে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় থাকেন। চীনা ওই নাগরিকের বোন ঢাকায় গার্মেন্টসের ব্যবসা করেন।
ফেসবুক এবং ওই নাগরিকের বোনের মাধ্যমে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি তাদের পারিবারিক ভাবেও জানাশোনা ছিল বলে জানা গেছে।
চুই চীন থেকে ঢাকায় এসে ফারিয়ার সাথে দেখা করে ঈদুল আজহার পরদিন বোনের উপস্থিতিতে বিয়ে করেন।
ফারিয়ার বাবা সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘মোবাইলের মাধ্যমে আমার মেয়ের সাথে চীনা ছেলেটির পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার পর ওই ছেলে আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চাইলে আমরা তাকে আমাদের দেশে আসতে বলি এবং সব আইন মেনে বিয়ে দিয়েছি। যদিও তারা প্রথমে ঢাকাতে বিয়ে করে। গ্রামে আসার পর আবার বিয়ে দিয়েছি।’
ফারিয়ার মা আনজু খাতুন বলেন, ‘আমরা পারিবারিকভাবে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। জামাই অনেক ভালো ও শান্ত স্বভাবের। আমার মেয়েকে চীনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছে।’
ফারিয়া বলেন, ‘সাউই চুইয়ের সাথে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরে পরিবারের সবাই তাকে পছন্দ করে। আমার পরিবার রাজি থাকায় প্রায় আট মাস উই চ্যাটের মাধ্যমে কথাবলি। সাউই চুই আমাকে কিছু ভাষা শিখিয়ে দিয়েছিল। সেগুলো দিয়ে তার সঙ্গে আমি কথা বলেছি, বলছি। তারপরে গত ২০দিন আগে আমাদের বিয়ে হয়। তিনি সবকিছু মানিয়ে নিতে চেষ্টা করেন। ভাষাগুলো শিখতে আমার আরও সময় লাগবে। আমি চেষ্টা করছি। কিছুদিনের মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষ করে আমাকে চীনে নিয়ে যাবেন। আমি টুকটাক কথা বাংলায় বললে ওনি বুঝতে পারেন। তা ছাড়া গুগল ট্রান্সলেটর ব্যবহার করে কথা বলি। খুব দ্রুত চীনা ভাষা শিখে যাব।’
সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসাবুল ইসলাম মিল্টন বলেন, ‘চীন থেকে এসে এক যুবক গয়েশপুর গ্রামের একটি মেয়েকে বিয়ে করেছ। এটা আমি শুনেছি এবং ছেলেটাকে দেখতে প্রতিদিন তার বাড়িতে মানুষ ভিড় করছে। ভিসা সংক্রান্ত কাজ শেষ করে ছেলেটি মেয়েটিকে চীনে নিয়ে যাবেন বলে জানতে পেরেছি। এতে করে দারিদ্র্যও ঘুচবে বলে আমার মনে হয়। মেয়ের পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসবে।’
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘চীনের এক নাগরিক জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর গ্রামে এসে একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে। বিয়ের ঘটনাটি আমরা শুনেছি। তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছে। তাদের সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।’