সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩, ১০:২৬ এএম
আগুনে পুড়ে গিয়েছিল জো অ্যান ইউসারির বাড়ি। এরপর এক উদ্ভট চিন্তা মাথায় চাপে এই নারীর। আর সেটা হলো সাধারণ বাসাবাড়ি নয়, এখন থেকে উড়োজাহাজই হবে তাঁর থাকার জায়গা।
যেই ভাবা সেই কাজ। পরিত্যক্ত একটি বোয়িং ৭২৭ উড়োজাহাজ কিনে নেন অ্যান। পরে নিজের একটি প্লটে এনে রাখেন এটি। ছয় মাস খেটে উড়োজাহাজটি বসবাসের উপযোগী করে তোলেন। বেশির ভাগ কাজ করেন নিজেই।
শেষ নাগাদ উড়োজাহাজটিকে সুন্দর একটি বাসায় পরিণত করেন তিনি। দেড় হাজার বর্গফুটের এই বাসায় আছে তিনটি শয়নকক্ষ, দুটি গোসলখানা। আর ককপিটের জায়গায় রয়েছে উষ্ণ পানির একটি বাথটাবও। সেই নব্বই দশকে পুরো কাজটিতে অ্যানকে ব্যয় করতে হয়েছে ৩০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় বর্তমানে হিসাব করলে এ অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩৩ লাখ টাকা।
যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের বেনোইট শহরের বাসিন্দা অ্যান পেশায় একজন রূপচর্চাবিশেষজ্ঞ। বেসামরিক বিমান পরিবহনের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগসূত্র ছিল না। অ্যানকে উড়োজাহাজে থাকার এই উদ্ভট পরামর্শ দেন তাঁর দুলাভাই। তিনি পেশায় একজন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার। অ্যান ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ওই উড়োজাহাজে বসবাস করেন।
অবশ্য উড়োজাহাজকে বাসাবাড়ি বানানো অ্যানই একমাত্র ব্যক্তি নন। তাঁর এই নিখুঁত প্রকল্পে অন্যরাও উৎসাহিত হয়েছেন। ১৯৯০–এর দশকের শেষ দিকে ব্রুস ক্যাম্পবেল উড়োজাহাজে বসবাস শুরু করেন। পেশায় তড়িৎ প্রকৌশলী ক্যাম্পবেলের বেসরকারি বৈমানিক লাইসেন্স আছে।
ক্যাম্পবেল বলেন, ‘আমি গাড়ি চালিয়ে রেডিও শুনতে শুনতে বাসায় ফিরছিলাম।
ওই সময় অ্যানের উড়োজাহাজে বসবাসের গল্পটি বলা হচ্ছিল। ঘটনাটি এতটাই বিস্ময়কর ঠেকছিল যে গাড়ি চালানোর ওপর মনোযোগ ছিল না।’
অরেগন অঙ্গরাজ্যের হিলসবোরোতে গাছগাছালিঘেরা একটি এলাকায় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে একটি পরিত্যক্ত ৭২৭ উড়োজাহাজকে বাসা বানিয়ে বসবাস করছেন ক্যাম্পবেল। তিনি বলেন, ‘আমি এখনো অ্যানের দেখানো পথেই আছি। এমন একটি অগ্রসর ধারণা দেওয়ার জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।’
এত বছর উড়োজাহাজে বসবাস নিয়ে কোনো অনুশোচনা নেই ক্যাম্পবেলের। তিনি আরও বলেন, ‘আমি সাধারণ বাসাবাড়িতে কখনোই থাকব না। এমনটা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’