ফিলিস্তিনের জাতীয় বীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ২৫, ২০২১, ০৪:৪৩ এএম

ফিলিস্তিনের জাতীয় বীর

মুহাম্মদ আবদেল রহমান আব্দেল রউফ আরাফাত আল-কুদওয়া আল-হুসেইনী। তবে ইয়াসির আরাফাত নামেই বিশ্বব্যাপী পরিচিত। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রতীক। আজীবন সংগ্রাম করেছেন ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী মানুষের জন্য। ফিলিস্তিনের এই জাতীয় বীরের জন্মদিন আজ ২৪ আগস্ট। ১৯২৯ সালের এই দিনে কায়রোতে জন্মগ্রহণ করেন ফিলিস্তিনের এই জাতীয়তাবাদী নেতা।

ইয়াসির আরাফাত ১৯৪৪ সালে কায়রোর ইউনিভার্সিটি অব কিং ফুয়াদ ওয়ান থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা শেষ করে কুয়েতে অধ্যপনা শুরু করেন। ১৯৫৯ সালে জাতীয়তাবাদী দল ফাতাহ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনটি ইসরাইলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম পরিচালনা করে।

১৯৬৪ ফিলিস্তিনের সব সশস্ত্র দলগুলোকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসেন ইয়াসির আরাফাত। সর্বদলীয় জোট হিসেবে গঠন করেন প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)। ১৯৬৯ সালে তিনি পিএলওর নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে অসলো চুক্তি হয় ১৯৯৪ সালে। এসময় ইসরাইলি নেতা আইজাক রবিন ও শিমন পেরেজের সঙ্গে ইয়াসির আফরাফাত নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। অসলো চুক্তিতে অসন্তুষ্ট হয়ে ফিলিস্তিনি মুক্তি সংগ্রামীদের একটি বড় অংশ ইয়াসির আরাফাতের বিরুদ্ধে চলে যায়। এর মধ্যেই হামাসসহ বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠনের উত্থান ঘটে।

২০০২ সালেল ঘটনা। ইসরাইল তার সব নিষ্ঠুরতা নিয়ে আরাফাতের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী টানা দুই বছর আরাফাতকে রামাল্লার দফতরে গৃহবন্দি করে রাখে।বিচ্ছিন্ন করে দেয় তার দপ্তরের বিদ্যুৎ-পানি ও গ্যাসের সংযোগ। তার চিকিৎসা কার্যক্রম পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

২০০৪ সালের ১২ অক্টোবর। ইয়াসির আরাফাতকে মুমূর্ষু অবস্থায় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের একটি সামরিক হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু সেখানে তার অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে এবং কোমায় চলে যান। ওই বছরের ১১ নভেম্বর তিনি মারা যান।

ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যু নিয়ে এখনও ধোয়াশা রয়েছে। মৃত্যুর সময় বলা হয়, তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। তবে ২০১২ সালে সুইস বিজ্ঞানীরা বলেছেন, তার হাড়ে যে পরিমাণ পোলিনিয়াম নামে একটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ পাওয়া গেছে তা মানবদেহের স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ১৮ গুন বেশি।

ইয়াসির আরাফাত যখন মারা যান তখন তিনি পরিণত হয়েছেন এক আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বে। তার ভক্ত এবং নিন্দুকেরও কোনো অভাব ছিল না। তার সমর্থকদের চোখে আরাফাত ছিলেন ফিলিস্তিনি জাতীয়তাবাদের পিতা। অন্যদিকে বহু ইসরায়েলির চোখে তিনি ছিলেন একজন সন্ত্রাসবাদী- যিনি আসলে কখনো বদলাননি।

 

Link copied!