স্মার্ট বাংলাদেশে সবার থাকবে ডিজিটাল ডিভাইস: প্রধানমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ২৯, ২০২৩, ০১:২৬ এএম

স্মার্ট বাংলাদেশে সবার থাকবে ডিজিটাল ডিভাইস: প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সিআরআই

সবাই ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করুক এমন চাওয়া জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা চাচ্ছি আমাদের সরকারের সমস্ত কাজ ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে করব। যাতে স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট সরকার এবং আমাদের ইকোনমিও হবে স্মার্ট ইকোনমি। অর্থাৎ আমরা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় কাজগুলো চালাব। এতে আমাদের কর্মঘণ্টা বাঁচবে। যোগাযোগ যাতায়াতের সমস্যা হবে না।

গত ২২ ডিসেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’ অনুষ্ঠানে তরুণদের মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) উদ্যোগে ‘লেটস টক’ অনুষ্ঠানের ৫২তম আসরটি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়। এই অনুষ্ঠানের ভিডিওটি বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সিআরআই ও ইয়াং বাংলার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে সম্প্রচার করা হয়।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তরুণ সংগঠক এবং নিজের কর্মক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন এমন তরুণদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্নোত্তর-আলোচনার পাশাপাশি তরুণদের পরামর্শ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

চেইঞ্জমেকার, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি হিসেবে এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ার ইনফ্লুয়েন্সারও উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠানে।

তিনি আরও বলেন, পেনশন থেকে শুরু করে বিল দেওয়া পর্যন্ত সমস্ত কাজ অনলাইনে করছে। এমনকি আমি যে প্রথমবার ক্ষমতায় এসে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি করেছিলাম তা আমরা সেগুলো অনলাইনে দিয়ে দিই।

আওয়ামী লীগ সরকার প্রযুক্তি শিক্ষায় গুরুত্ব দেয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে কম্পিউটার শিক্ষাটায় জোর দিচ্ছিলাম। আমরা চাচ্ছিলাম আমাদের ছেলে মেয়েরা প্রযুক্তি শিক্ষাটা নেয়। তখন বিজ্ঞানের প্রতি এত আগ্রহ ছিল না। আমরা কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণ করে ফেলেছি। আমরা সারা বাংলাদেশ ব্রডব্যান্ড কানেকশন দিচ্ছি। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। এছাড়া  এখন ওয়াইফাই কানেকশন সারা বাংলাদেশে। আমরা ৪ জি ব্যবহার করছি। ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভেল্টের জন্য ফাইভজির দিকে যাচ্ছি। এসব কাজ আমরা করে ফেলেছি।

তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপটা কী হবে? সেখানেও আবার আমার ছেলে বুদ্ধি দিল যে আমরা এবার স্মার্ট বাংলাদেশ করব। স্মার্ট বাংলাদেশের কনসেপ্ট হলো যে আমাদের যারা ছেলে মেয়ে আছে  তাঁরা যেন শিক্ষা-দীক্ষা-জ্ঞানে এবং প্রযুক্তি বিজ্ঞানে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে উঠবে। পাশাপাশি সরকারকেও স্মার্ট সরকার গঠন করতে হবে।

প্রথম সরকারে এসে দেখেছি একটা কম্পিউটার সাজানো আছে। ওটা কেউ ছুঁয়ে দেখে না। কিন্তু এখনতো আর সেটা না।  আমাদের সব মোবাইল ছিল এনালগ। একটা ফোনের দাম ছিল এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। আমি যখন সরকারে আসলাম আমি তখন সিদ্ধান্ত নিলাম এটাকে উন্মুক্ত করে দিব। তখন আমরা বেসরকারি সেক্টর উন্মুক্ত করে দিলাম। এখন মোবাইল ফোন সবার হাতে হাতে পৌঁছে গেছে। সেই সাথে কম্পিউটার ব্যবহার। স্কুল থেকে শুরু করে দিলাম। ভ্যানে করে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ছেলে মেয়েদের শেখানো শুরু করলাম।

 

ফ্রিল্যান্সিং খাতের বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জানান, এখন ৬ লাখ ৮০ হাজার ছেলে-মেয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে অর্থ উপার্জন করে। একসময় তাঁরা সমস্যায় পড়ত। তাঁদের ব্যাংকগুলো জিজ্ঞেস করতো এত টাকা কোত্থেকে আসে? এ নিয়ে আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে ডেকে বিষয়টি সহজ করে দিতে বললাম। এছাড়া ফ্রিল্যান্সারদের সার্টিফিকেট, রেজিস্ট্রেশন ও স্বীকৃতির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। পাশাপাশি আমি বক্তব্যে এটা নিয়ে বলতে শুরু করলাম। এটাকে আরও জনপ্রিয় করার জন্য যে এটাও একটা ইনকামের সুযোগ। তবে কোভিড ১৯ এর অতিমারির সময় এই ডোরটা ওপেন হয়ে গেল। তখন আমিও বসে বসে আমার সব মিটিং ভার্চুয়ালি করেছি। ৪১ এর বাংলাদেশে আমাদের সব ছেলে-মেয়ে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করবে। এবং যত প্রযুক্তি আসবে তা শিখে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

স্মার্ট বাংলাদেশ করলে কিন্তু ডিজিটাল সিকিউরিটি থাকে হ্যাকিং হয়,বাংলাদেশ ব্যাংকেও সিকিউরিটি হ্যাকিং হয়েছিল। এছাড়া সরকারি সাইট থেকেও তথ্য চুরি হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে নেক্সট জেনারেশনের জন্য আপনারা কী পদক্ষেপ নেবেন?- 

তরুণদের থেকে আসা এ প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স যেমন আমাদের জন্য একটা নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে পাশাপাশি সমস্যাও সৃষ্টি করে। আর হ্যাকিংয়ের ব্যাপারে বলব, বাংলাদেশ ব্যাংক যখন ডিজিটালাইজড করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আমাদের আসার আগে। এটা বোধহয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা নিয়ে শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকে কোনো ফায়ারওয়াল ছিল না। তাই সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। এ জন্য হ্যাকিংটা হয়েছিল। যে কোন ইস্যুতে আমাদের সিকিউরিটিটা ঠিক আছে কি না বা কোন পদ্ধতিতে করা যায় সেটা নিজেদেরই সতর্ক থাকতে হবে।  এর বাইরে আমরা সাইবার নিরাপত্তা আইন করেছি। তারপরও আমরা বলব যারা ব্যবহার করবে তাদের সচেতন থাকতে হবে।

Link copied!