বিনোদন বা জরুরী কাজে, স্মার্টফোন অ্যাপের ব্যবহার সব ক্ষেত্রেই জরুরী। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এ অ্যাপগুলো নামানোর সময় ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ফোনের মাইক্রোফোন, কল লগ, ক্যামেরাসহ বিভিন্ন তথ্য ব্যবহারের অনুমতি চায় এবং তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের অনলাইন কার্যক্রমের বিভিন্ন ইতিহাস, পছন্দ বা অপছন্দের তথ্য সংগ্রহ করে অ্যাপগুলো।
আমরা বিভিন্ন আ্যাপে যে বিজ্ঞাপনগুলো দেখি তা মূলত এ তথ্য সংগ্রহেরই ফল। সম্প্রতি ব্যবহারকারীদের সবচেয়ে বেশি তথ্য সংগ্রহ করা অ্যাপগুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ডিজিটাল মুদ্রা ক্রিপ্টোকারেন্সির জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম ‘দ্য মানি মঙ্গারস’।
তালিকায় শীর্ষ স্থানে ছিলো কোন ১০ টি আ্যাপ ? চলুন তা জেনে নেয়া যাক।
এ তালিকায় সবার শীর্ষে রয়েছে মেটার মালিকানাধীন ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, থ্রেডস ও মেসেঞ্জার। অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীদের আগ্রহ ও চাহিদা বুঝে বিজ্ঞাপন প্রচার করতেই এসব তথ্য সংগ্রহ করে থাকে।
দ্য মানি মঙ্গারসের তথ্যমতে, ব্যবহারকারীদের প্রায় ৮৬ শতাংশ তথ্য সংগ্রহ করে অ্যাপগুলো। মেটার মালিকানাধীন আ্যাপগুলোর পরেই তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছে লিংকডইন। ব্যবহারকারীদের ৬৫ শতাংশ তথ্য সংগ্রহ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি।
তালিকার ষষ্ঠ স্থানে থাকা ‘উবার ইটস’ ব্যবহারকারীদের ৫৪ শতাংশ তথ্য সংগ্রহ করে। তালিকার সপ্তম ও অষ্টম স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনলাইন খাবার সরবরাহের অ্যাপ ‘ডোর ড্যাশ’ এবং এক্স।
ব্যবহারকারীদের ৫০ শতাংশ তথ্য সংগ্রহ করে অ্যাপগুলো। তালিকায় নবম ও দশম স্থানে রয়েছে ইউটিউব এবং ইউটিউব মিউজিক। অ্যাপ দুটি ব্যবহারকারীদের ৪৭ শতাংশ তথ্য সংগ্রহ করে বলে জানিয়েছে `দ্য মানি মঙ্গারস`।
এবার জেনে নেয়া যাক স্মার্টফোনে ভাইরাস ছড়াতে সক্ষম এমন এ্যাপগুলো সম্পর্কে।
সম্প্রতি রাশিয়ার অ্যান্টিভাইরাস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ড. ওয়েব স্মার্টফোনে ভাইরাস ছড়াতে সক্ষম ১৬টি অ্যাপের সন্ধান দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বিভিন্ন সুবিধার প্রলোভনে পড়ে অ্যাপগুলো নামালেই ব্যবহারকারীদের ফোনে জোকার, ফেকঅ্যাপ ও হিডেনঅ্যাডস ট্রোজান ভাইরাস প্রবেশ করে।
গুগলের নিরাপত্তাব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে এরই মধ্যে প্লে স্টোরে জায়গা করে নেওয়া এ অ্যাপগুলো ২০ লাখের বেশিবার ডাইনলোড করা হয়েছে। ব্যবহারকারীই অনেকেই রয়েছেন সাইবার হামলার ঝুঁকিতে।যদিও ভাইরাস ছড়ানোর অভিযোগে এরই মধ্যে প্লে স্টোর থেকে ক্ষতিকর অ্যাপগুলো ইতিমধ্যেই সড়িয়ে ফেলেছে গুগল।
তবে অসংখ্য ব্যবহারকারীদের ফোনে অ্যাপগুলো ইন্সটলড থাকায় অ্যাপগুলো এখনো তথ্য সংগ্রহ করে পাচার করতে সক্ষম। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা যত দ্রুত সম্ভব ব্যবহারকারীদের ফোন থেকে অ্যাপগুলো মুছে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন।
ড. ওয়েবের তথ্যমতে, ‘সুপার স্কিবিডি কিলার’ নামক ক্ষতিকর অ্যাপটি সবচেয়ে বেশিবার নামানো হয়েছে । ১০ লাখের বেশিবার নামানো হয়েছে এ অ্যাপটি। তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে ‘এজেন্ট শুটার’ ও ‘রাবার পাঞ্চ থ্রিডি’। প্রায় পাঁচ লাখবার করে নামানো হয়েছে অ্যাপ দুটি।
অন্যান্য অ্যাপগুলোর মধ্যে রয়েছে ইন্টারনাল মেজ, রেইনবো স্ট্রেচ, ইনচ্যান্টেড ইলিক্সির, ফায়ার ফ্রুটস, জাঙ্গল জুয়েলস, স্টিলার সিক্রেটস, গ্যাজইনডো ইকোনমিক, কাউবয়েজ ফ্রন্টিয়ার, ফিন্যান্সিয়াল ফিউশন, ফিন্যান্সিয়াল ভল্ট, মানিমেন্টর, লাভ ইমোজি মেসেঞ্জার ও বিউটি ওয়ালপেপার এইচডি। ।
অ্যাপ নামানোর আগে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য ব্যবহারকারীদের খোঁজখবর নিতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও অপরিচিত লিংক থেকে অ্যাপ না নামানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।