মানুষের ভুলে যাওয়া রোগ বা আলঝেইমার্সের কারণ নির্ণয়ে আরো একধাপ এগিয়ে গেলেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি তারা দেখতে পেয়েছেন, মানুষের মস্তিস্কের গ্রে ম্যাটারে বিষাক্ত চর্বিজাতীয় লিপোপ্রোটিন পদার্থের সঞ্চারণ ঘটিয়ে মানুষের ভুলে যাওয়া রোগের সূত্রপাত ঘটায়।
অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন হেলথ ইনোভেশন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একদল বিজ্ঞানী এই গবেষণাটি করেছেন। তারা তাদের ইঁদুরের ওপর প্রাথমিক গবেষণা করেছেন। তারা বলছেন, এটি কেবল শুরু তবে এর মাধ্যমে একটি অগ্রযাত্রার সূত্রপাত হলো। আমরা নিশ্চিত যে, আলঝেইমার্সের কারণ উদঘাটনে এই গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
গত কয়েক দশকে বিভিন্ন গবেষণায় প্রোটিনের বেটা-অ্যামলয়েড নামের একটি ক্ষুদ্রাংশ মানুষের স্মৃতিভ্রংশ বা আলঝেইমার্স রোগের প্রধান কালপ্রিট বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, তারা এখনো নিশ্চিত না কেন বেটা-অ্যামলয়েড প্রোটিন কিভাবে মস্তিস্কে নিউরনকে ধ্বংস করে তা এখনো পরিস্কার না। তবে এই বেটা-অ্যামলয়েড প্রোটিন যে, মস্তিস্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে না এবং মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য এটি ক্ষতিকর তা নিশ্চিত। তবে এই প্রোটিন দেহের বিভিন্নস্থানে উৎপন্ন হয়ে রক্তের মাধ্যমে মস্তিস্কে ছোটাছুটি করে নিউরনকে ধ্বংস করে এব্যাপারে নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা। কেবল বেটা-অ্যামলয়েড প্রোটিন কেবল একাই এ ধ্বংসযজ্ঞে শামিল নয় তার সাথে আছে একধরনের লিপোপ্রোটিনও যা নিউরনের ধ্বংসকে ত্বরান্বিত করে।
গবেষক জন ম্যামো জানাচ্ছেন, ‘মানুষের এই বিষাক্ত রাসায়নিকগুলো মানুষের দেহের বিভিন্নস্থানে তৈরি হয়। এরপর তা রক্তের মাধ্যমে বাহিত হয়ে মানুষের মস্তিস্কে পৗঁছে নিউরন ধ্বংস করে দেয়‘।
গবেষকরা বলছেন, তারা মস্তিস্কে রক্তবাহী কৈশিক জালিকার লিকেজ বা ছিদ্রের মাধ্যমে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণ বেটা-অ্যামালয়েড লিপোপ্রোটিন ব্রেইনে গিয়ে জমা হয়ে নিউরনের কর্মক্ষমতা রুদ্ধ করে দেয়।
সারা বিশ্বে প্রায় ৩ কোটি মানুষ এই আলঝেইমার্স রোগের ভূক্তভোগী। সুতরাং, এই অগ্রগতি যে মানুষের আলঝেইমার্স সারিয়ে দিতে একধাপ এগিয়ে যাবে তা নিশ্চিত করে বলা যায়।