কেউ বলেন কিয়ামত, কেউ বলেন ডুমস ডে। তবে তা সত্যিই আসবে একদিন। এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আমাদের সৌর জগতের প্রাণ সূর্য একদিন তার জ্বালানী শেষ হয়ে যাওয়ায় আর আলো-তাপ দিতে পারবে না। ফলে শেষ হয়ে যাবে সৌর জগতের ভারসাম্য।
ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আলবার্ট জিলস্ট্রার নেতৃত্বে একদল গবেষক গবেষণা করেছেন সূর্যের ভবিষ্যত কি হতে পারে তা নিয়ে। তাদের মতে, ৪৬০ কোটি বছর বয়েসী সূর্য আগামী ১০০০ কোটি বছর পর এর জ্বালানী তথা হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম ফুরিয়ে যাওয়ায় পরিণত হবে নেবুলায়। যার প্রধান উপাদান হবে বিভিন্ন গ্যাস আর ধুলো। যদিও অনেক লম্বা সময়। তবুও তো নিশ্চিত ধ্বংস।
তবে নেবুলায় পরিণত হওয়ার আগে অর্থাৎ এখন থেকে আরো ৫০০ কোটি বছর পরই মূলত আমাদের সূর্য পরিণত হবে রেড জায়ান্ট বা লাল দানবে। আকারে বেড়ে যাবে বহুগুণ। বাড়বে তার ভর, আকর্ষণ ক্ষমতা। এবং তার আকার এতই বেড়ে যাবে যে সূর্যের বাইরে সীমানা মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথকে ছাড়িয়ে যাবে। আর মঙ্গলকে যখন সূর্য গিলে খাবে তখন আমাদের গ্রহের অস্তিত্বও যে আর থাকবে না তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তবে মানুষের অস্তত্বি শেষ হবে তার আগেই। কেননা সূর্য প্রতি ১০০ কোটি বছরে তার নিজস্ব ঔজ্জ্বল্য ও তাপমাত্রা ১০ শতাংশ করে বাড়াচ্ছে। বর্তমানে সূর্যের উপরিপৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ৫ হাজার ৬ শত ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সূর্যের কেন্দ্রের তাপমাত্রা প্রায় দেড় কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাহলে আগামী ৫০০ কোটি বছরে পাঁচবার ১০ শতাংশ করে তাপ বাড়লে কেমন হবে এই পৃথিবীর অবস্থা যেখানে আমরা পৃথিবীর বর্তমান ৪০/৫০ডিগ্রি তাপমাত্রায়ই নাকাল হয়ে আছি।
শুনতে মনে হচ্ছে যে, অনেক দূরের ব্যাপার। কিন্তু আসলে তা নয়। কেননা সূর্যের ঔজ্জ্বল্য এবং তাপমাত্রা ১০০ কোটি বছর পরপর হুট করে বাড়ে না। বাড়ে প্রতিদিন, প্রতিমুহুর্ত। ফলে ঝুঁকি আমাদের কাছেই।
সায়েন্স এলার্ট অবলম্বনে।