লিওনেল মেসি ও তার আর্জেন্টিনার জয়জয়কার!
লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে এ এক অসাধারণ রাত। ফুটবল রোমান্টিকরা কঠিন লড়াই আশা করেছিলেন। তার কিছুই হলো না। আর্জেন্টিনা একপেশেভাবে ম্যাচটি জিতে নিল। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী ইতালিকে ৩-০ গোলে হারাল কোপা আমেরিকা জয়ী আর্জেন্টিনা। মেসির আর্জেন্টিনা যেন প্রয়াত কিংবদন্তি ম্যারাডোনার ৮৬‘র আর্জেন্টিনাকে মনে করাচ্ছে। কাতার বিশ্বকাপে বুক ভরা আশা নিয়ে যাবে মেসি বাহিনী।
আর্জেন্টিনার হয়ে ৩টি গোল করেছেন মার্টিনেজ , ডি মারিয়া ও ডিবালা। মার্টিনেজ একটি গোল করার পাশাপাশি আরেকটিতে রেখেছেন ভূমিকা। মেসি-মার্টিনেজ-ডিমারিয়া মিলে ধ্বংস করলেন ইতালির গর্ব।
ম্যারাডোনাকে স্মরণ করালেন মেসি। ১৯৯৩ সালে ম্যারাডোনা এই শিরোপা জিতেছিলেন। এবার মেসি জিতলেন। অসাধারণ একটি অর্জন ফুটবলের যুবরাজ লিওনেল মেসির।
ইতালি আরো গোল হজম করতে পারতো। যদি ইতালির গোলরক্ষক ডোনারুমা না থাকতেন। মেসি ও ডি মারিয়ার শট দ্বিতীয়ার্ধেও রুখে দেন তিনি। স্কোরলাইন আরো বড় হতেই পারতো। মেসি নিজে দুটি সুযোগ পেয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। ডোনারুমা রুখে দিয়েছেন। ডি মারিয়ার একটি শট পাখির মত ফ্লাই করে রুখে দেন ইতালির গোলরক্ষক। আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়ার্ধের শেষে ডিবালার গোল করেন মেসির পাস থেকে (৯০+৪)।
১৯৯৩ সালে দিয়েগো ম্যারাডোনা জিতেছিলেন ফিনালিসিমা। কোপা চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা সেবার ডেনমার্ককে হারায় টাইব্রেকে। এবার সে শিরোপা উঠলো লিওনেল মেসির হাতে। কোপা আমেরিকা ও ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ীর লড়াই এটা।
লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার সাপোর্টারদের উচ্ছ্বাসে মুখরিত ছিল। ইতালির ডিফেন্ডার চিয়েলিনির বিদায়ী ম্যাচ ছিল এটা। খেলা শুরু হতেই আর্জেন্টিনা ঝাপিয়ে পরে ইতালির ওপর। লাতিন ছন্দে নাকাল হয় ২০২২ বিশ্বকাপ কোয়ালিফাই না করতে পারা ইতালি। কে বলবে এই লন্ডনের ওয়েম্বলিতে তারা ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিল ২০২১।
ম্যাচের ২৮ মিনিটে বল নিয়ে ক্ষিপ্র বেগে ছুঁটে যান মেসি। তাকে ইতালির রক্ষণভাগের ৩ জন রুখতে পারেনি। দারুণ পাস দেন বক্সে মার্টিনেজকে। হালকা টাচে বল জালে পাঠিয়ে দেন মার্টিনেজ।
ইতালি খেই হারিয়ে ফেলে এরপর আরো। ৪ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা বলের নাগালিই পাচ্ছিল না। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগে (৪৫+১) মার্টিনেজের পাস থেকে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ভূবন ভোলানো সেই আইকনিক গোলটি করেন। একই রকম গোলে তিনি কোপা আমেরিকা জিতিয়েছিলেন আর্জেন্টিনাকে ২০২১ সালে। প্রথমার্ধ শেষে ২-০ গোলের লিড নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।
টানা ৩২ ম্যাচ অপরাজিত থাকলো কোচ স্কলানির আর্জেন্টিনা। কাতার বিশ্বকাপে এই উজ্জ্বীবিত আর্জেন্টিনা কি দিয়েগো ম্যারাডোনার (১৯৮৬) পর বিশ্বকাপ জিততে পারবে? অনেক আগেই প্রশ্নটি করা হলেও আজ তাদের দাপট দেখে মনে হয়েছে তারা ছাড় দেবে না সহজে।
আর্জেন্টিনা কোপা আমেরিকার ফাইনালে গত বছর হারায় ব্রাজিলকে। জয়সূচক গোলটি ছিল ডি মারিয়ার। আর ইতালি টাইব্রেকে ইংল্যান্ডকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা জেতে। নির্ধারিত খেলার সময় ফল ১-১ গোলে ড্র ছিল।
ফিনালিসিমার এটি তৃতীয় আসর। ১৯৮৫ সালে ফ্রান্স উরুগুয়েকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল। ৩ বারের আসরে ২ বার আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন।