টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর মিশন শুরু করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুর ২টায় শুরু হওয়া সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি সরাসরি দেখাবে গাজী টিভি ও টি-স্পোটর্স।
কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব শুরুর পর এই প্রথমবার মাঠে বসে খেলা উপভোগ করার সুযোগ পাচ্ছে ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে সে জন্য থাকতে হবে টিকা নেয়ার সনদ এবং বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে।
সদ্য শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ব্যপক পরিবর্তন এনে নতুন রুপে সাজানো হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। বিশ্বকাপে যাচ্ছেতাই পারফরমেন্সের কারনে চার জন নতুনসহ ছয় জনকে দলে নেয়া হয়েছে। বিশ্বকাপ সুপার টুয়েলভে কোন জয় পায়নি বাংলাদেশ। বাছাই পর্বে স্কটল্যান্ডের মত দলের কাছে হেরে বিশ^কাপ শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। পরে ওমান এবং পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে স্বস্তির জয় তুলে নিয়ে সুপার টুয়েলভে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে টাইগাররা।
বহু বছর পর দলের সেরা তিন খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান-তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমকে ছাড়া খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ইনজুরির জন্য দলের বাইরে সাকিব-তামিম। আর বিশ্রাম দেয়া হয়েছে মুশফিকুর রহিমকে। দলে একমাত্র সিনিয়র খেলোয়াড় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপে দলের খারাপ পারফরমেন্সের পরও অধিনায়কত্ব ধরে রেখেছেন মাহমুদুল্লাহ।
বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়েন লিটন দাস-সৌম্য সরকার এবং রুবেল হোসেন। পিঠের ইনজুরির কারনে সিরিজটি মিস করছেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
পুনরায় দলে ডাক পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত এবং আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। নতুন হিসেবে এই ফরম্যাটে ডাক পেয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ^কাপ জয়ী অধিনায়ক আকবর আলি, সাইফ হাসান, ইয়াসির আলি চৌধুরি এবং পেসার শহিদুল ইসলাম।
পাকিস্তান সিরিজে দলে ব্যপক পরিবর্তনের বিষয়টি আলোচনায় থাকলেও এত বড় পরিবর্তন অনেকেই প্রত্যাশা করেননি। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু স্পষ্ট করেছেন, এই ফরম্যাটে নতুন শুরু করতে চান তারা এবং তাই এত বেশি নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ দেয়া হয়েছে।
বর্তমানে দুর্দান্ত ফর্মে আছে পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলেছে তারা। সেমিতে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায় পাকিস্তান। সুপার টুয়েলভে পাঁচ ম্যাচের সবগুলোতে জিতলেও, নক-আউট পর্বে দিনটি পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো না। সুপার টুয়েলভে চিরপ্রতিন্দ্বন্দি ভারতের বিপক্ষেও স্মরনীয় জয় পেয়েছে পাকিস্তান। যা ছিল বিশ^কাপের মঞ্চে ভারতের বিপক্ষে প্রথম জয়।
পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে একটি ম্যাচ জেতাও কঠিন কাজ হবে বাংলাদেশের। তবে অতীত থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারে টাইগাররা। সর্বশেষ দু’বার ঘরের মাঠে এই ফরম্যাটে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়ে, দু’বারই জিতেছিলো বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এবং ২০১৬ সালে এশিয়া কাপে জিতেছিলো টাইগাররা।
ঘরের মাঠে সর্বশেষ দু’টি টি-টোয়েন্টি সিরিজেও জিতেছিলো বাংলাদেশ। বিশ^কাপের আগে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে নাস্তানাবুদ করে টাইগাররা। যদিও ঐ দুই সিরিজের উইকেট অনেক বেশি ধীরগতির ও নি¤œমানের ছিলো। সিরিজ জিতলেও, সমালোচনার ঝড় ঠিকই উঠেছিলো। আশা করা হচ্ছে, পাকিস্তানের বিপক্ষে স্পোর্টিং উইকেট প্রস্তুত করা হবে।
২০১৫ সালের পর আবারো বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষীক সিরিজ খেলবে পাকিস্তান। আর ২০১৬ সালে বাংলাদেশের মাটিতে এশিয়া কাপ খেলেছিলো পাকিস্তান। বাংলাদেশের মাটিতে শেষ দুই টি-টোয়েন্টিতে হারলেও, বিশ^কাপে দুর্দান্ত পারফরমেন্সের কারনে আত্মবিশ^াসী থাকবে পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১২ ম্যাচের ১০টিতে জিতেছে পাকিস্তান।
তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরমেন্স আশানুরুপ নয়। ১৪৩ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৪৩টিতে জিতেছে টাইগাররা। ৭৫টি ম্যাচ হারের পাশাপাশি ২টি পরিত্যক্ত হয়।