সেঞ্চুরিয়নে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৯ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের ৮২ বলে অপরাজিত ৮৭ রান, লিটনের সঙ্গে তাঁর ১২৭ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার ১৫৪ রান বাংলাদেশ পেরিয়ে গেল ১৪১ বল বাকি রেখেই। অবলীলায় এই জয়ের পথে কত না রেকর্ড গড়ল লাল-সবুজের দলটি।
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচের একদিকে তাসকিন আহমেদের আগুনে বোলিংয়ে ৫ উইকেট, তামিমের ৮২ বলে অপরাজিত ৮৭ রানের লড়াকু ব্যাটিং, ‘ধৈর্য্যশীল’ সাকিবের মাপা বোলিং, ফিল্ডিংয়ে শতভাগ উজাড় করে দেওয়ার উপলক্ষ্য— কী নেই? টাইগার টিমের ‘ভালো’র সমাহারই যেন ঘটল দক্ষিণ আফ্রিকার এই সিরিজে।
টাইগারদের এমন গৌরবোজ্জ্বল ছবি বহুদিন ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখবে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। ছবি: সংগৃহীত
সবাই যখন নানা পরিসংখ্যান নিয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন, হয়তো বাদ পড়ে গেলেন উইকেট আগলে রাখার পেছনের কারিগর মুশফিকুর রহিমকে! এদিন তিনিও যে নতুন এক মাইল ফলক স্থাপন করলেন। দুইশ ডিসমিশালের রেকর্ড গড়েছেন এই ‘কুলম্যান।’ তাসকিনের বলেই চারটি ক্যাচ ধরে এই সংস্করণের ক্যারিয়ারে ২০০ ক্যাচের মাইলফলক স্পর্শ করলেন তিনি।
বুধবার সেঞ্চুরিয়ানে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে তাসকিনের ফাইফার তুলে নেওয়ার ডেলিভারিতে কাগিসো রাবাদার ক্যাচ ধরেন মুশফিক। ঝাঁপিয়ে পড়ে বল লুফে নিয়েই নিজের ২০০তম ক্যাচ পূরণ করেন তিনি। উইকেটরক্ষক হিসেবে ১৯৮টি ও ফিল্ডার হিসেবে ২টি ক্যাচ রয়েছে তার। একই সঙ্গে ক্যারিয়ারের ২৫০তম ডিসমিসাল পূরণ করেন তিনি। ৫০টি স্টাম্পিংও রয়েছে তার নামের পাশে। এই মাইলফলকে পৌঁছাতে তাকে ম্যাচ খেলতে হয়েছে ২৩৩টি।
মুশফিকুর রহিম তার কাজটি করেছেন উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়েই। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
সামনে নিজেকে আরও বড় উচ্চতায় তোলার সুযোগ রয়েছে মুশফিকের। বর্তমানে ওয়ানডেতে ডিসমিসালের তালিকায় সাত নম্বরে রয়েছেন তিনি। তার উপরে থাকা সব খেলোয়াড়ই গেছেন অবসরে।
৪০৪ ম্যাচে ৫০১টি ডিসমিসাল নিয়ে তালিকার সবার উপরে রয়েছেন শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারা। এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট (৪৭২), ভারতের এমএস ধোনি (৪৪৪), দক্ষিণ আফ্রিকার মার্ক বাউচার (৪২৫), পাকিস্তানের মইন খান (২৮৭) ও ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (২৭৭) রয়েছেন মুশফিকের উপরে।
কাইল ভেরেইনাকে বোল্ড করে এদিন নিজের উইকেটশিকারের শুরু করেন তাসকিন। এরপর তুলে নেন আরও চারটি উইকেট। প্রতিটিতেই অন্যতম ভূমিকা রাখেন মুশফিক। দারুণ চারটি ক্যাচ লুফে নেন এই উইকেটরক্ষক। টাইগারদের জয়ের বন্দরে নিয়ে যাওয়ার জন্য মুশফিকের চারটি ডিসমিশালও বড় ভুমিকা রেখেছে এদিন। যার ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা শুধু টসেই জিতেছেন, খেলায় আর জয় পাননি তিনি।