নারী, তৃতীয় লিঙ্গ ও প্রতিবন্ধীদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কী ভাবছে সরকার; প্রশ্ন তরুণদের

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ২৯, ২০২৩, ০২:৩৯ এএম

নারী, তৃতীয় লিঙ্গ ও প্রতিবন্ধীদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কী ভাবছে সরকার; প্রশ্ন তরুণদের

ছবি: সিআরআই

গত ২২ ডিসেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’ অনুষ্ঠানে তরুণদের মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ আয়োজনে নারীদের কর্মক্ষেত্র, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সামাজিক অবস্থানের পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানের সুযোগে সরকার কী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এ নিয়ে জানতে চায় তরুণরা।

‘এখনও ৪৫ শতাংশ নারী সন্তান জন্মের পর পর কর্মক্ষেত্র থেকে অব্যাহতি নেয়। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের কী এমন কোন পরিকল্পনা আছে যেখানে বৃহৎ পরিসরে সরকারি উদ্যোগে ডে কেয়ার সুযোগ প্রদান করা হবে?’

তরুণদের এ প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি ক্ষমতায় আসার পর ৯৬ সালে সচিবালয়ে ডে কেয়ার সেন্টার করে দিই। এখন যতগুলো প্রজেক্ট পাস করা হচ্ছে সব জায়গায়ই ডে কেয়ার সেন্টারের কথা বলা আছে। যেসব গার্মেন্টস উন্নতমানের সবগুলো ডে কেয়ার সেন্টার করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে এয়ারপোর্ট থেকে শুরু করে সব প্রতিষ্ঠানে ডে কেয়ার সেন্টার করে দেয়া হচ্ছে। এটা ছিল আমাদের পরিকল্পনা। সরকারি হোক বেসরকারি হোক আমার কথা হচ্ছে সব জায়গায় ডে কেয়ার সেন্টার থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: তরুণদের আগ্রহ: ‘প্রধানমন্ত্রী’ শেখ হাসিনার যাপিত জীবন

মাতৃত্বকালীন ছুটি ও ভাতার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাতৃত্বকালীন ছুটি আগে তিন মাস ছিল সেটিকে ছয় মাস করে দিয়েছি। আর কর্মজীবী মায়েদের জন্য আমি আলাদা একটা ভাতা দিয়ে থাকি। যে মা বুকের দুধ খাওয়ায় তার জন্য আলাদা ভাতা দিই যাতে সন্তানের পুষ্টিটা ঠিক থাকে। আমরা কিন্তু সামাজিক নিরাপত্তা খাতে এ ব্যবস্থাটা করে আসছি।

তরুণসমাজ প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রাখে, ‘২০৪১ সালে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্য আমাদের জায়গাটা কোথায় হবে এবং আপনার প্রত্যাশা আমাদের কাছে কী?’

এ প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এখানে মানুষকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করি। নারী-পুরুষ ট্রান্সজেন্ডার যারাই হোক সবাই আমাদের সন্তান। প্রত্যেকটা পরিবার তাদের গ্রহণ করবে। আমি চাই তারাও একটা অধিকার নিয়ে সমাজে দাঁড়াবে এবং সেইভাবে কাজ করবে। সেই অবস্থাটাই আমরা সৃষ্টি করেছি। সেভাবে আমি স্বীকৃতি দিয়েছি। আমার এটাই আকাঙ্ক্ষা সকলে যার যার মেধাশক্তি মননকে ব্যবহার করে দেশকে ভালোবেসে দেশের জন্য কতটুকু দিতে পারবে সেই চিন্তা থাকতে হবে।’

প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারের পরিকল্পনা জানতে চেয়ে তরুণ সমাজের থেকে প্রশ্ন করা হয়, ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এখনও নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে অবকাঠামোগত যে সমস্যা রয়েছে সেগুলো দূরীকরণের ক্ষেত্রে আপনাদের পদক্ষেপ কী হতে পারে?’

আরও পড়ুন: আলোচনায় তরুণ প্রজন্ম- প্রধানমন্ত্রীর Let‍‍’s Talk

এরইমধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, নতুন যেসব প্রজেক্ট করা হচ্ছে সেগুলোতে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখছি। বিশেষ করে ট্রেনিং দেওয়া, খেলাধুলা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। সংসদ ভবনের পাশে শুধু মাত্র প্রতিবন্ধীদের জন্য একটা মিনি স্টেডিয়াম তৈরি হচ্ছে। এছাড়া সাভারে একটা অ্যাকাডেমি তৈরি করে দিচ্ছি প্রতিবন্ধীদের জন্য। এছাড়া ক্রিকেট টিম বিশেষ অনুদান দিয়ে ব্যবস্থা করে দিয়েছি খেলাধুলার জন্য। সবথেকে বিস্ময়ের ব্যাপার হলো প্রতিবন্ধীরা বিশেষ অলিম্পিক থেকে ২১টা স্বর্ণ পদক নিয়ে এলো।’

সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) উদ্যোগে ‘লেটস টক’ অনুষ্ঠানের ৫২তম আসরটি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়। এই অনুষ্ঠানের ভিডিওটি বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সিআরআই ও ইয়াং বাংলার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে সম্প্রচার করা হয়।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তরুণ সংগঠক এবং নিজের কর্মক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন এমন তরুণদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্নোত্তর-আলোচনার পাশাপাশি তরুণদের পরামর্শ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

চেইঞ্জমেকার, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি হিসেবে এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ার ইনফ্লুয়েন্সারও উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠানে।

Link copied!