ঘূর্ণিঝড় মোখা: ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ১৩, ২০২৩, ০৮:০৮ পিএম

ঘূর্ণিঝড় মোখা: ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি

বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদসংকেত এবং চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

শনিবার সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এক সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

পরে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত বহাল থাকছে। পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বরের পরিবর্তে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরের জন্য থাকছে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার দুপুর ১২টায় কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ এখন ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ার আকারে ১৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথ আগের মতোই কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূলের দিকে রয়েছে। এটি রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

তবে ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব শনিবার রাত থেকে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপর দেখা দিতে পারে বলে বুলেটিনে জানানো হয়।

উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বরিশাল, বরগুনা, পিরোজপুরের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। এজন্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছধরা নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বলছে, মোখা এরই মধ্যে চরম প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে, যা সুপার সাইক্লোনের আগের ধাপ। এটি ৮ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে।

ঝড়টি সাগরে শক্তি আরও বাড়ালেও উপকূলে আঘাত হানার আগে এর তীব্রতা কমে আসবে বলে আভাস দিচ্ছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ। তাদের বুলেটিনে বলা হয়েছে, রোববার দুপুরে ১৫০-১৬০ কিলোমিটার বাতাসের শক্তি নিয়ে এটি উপকূলে আঘাত হানবে।

বাংলাদেশের স্থলভাগে তাপপ্রবাহ বয়ে চলার মধ্যে সোমবার দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোসাগর ও এর সংলগ্ন আন্দামান সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়।

তখন থেকে এর আরও ঘনীভূত হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছিল। মঙ্গলবার এটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং পরে নিম্নচাপে পরিণত হয়। বুধবার এটি গভীর নিম্নচাপ হয়েই সাগরে ছিল। বৃহস্পতিবার তা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। একই দিনে তা অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।

এসকাপের আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এটি ইয়েমেনের দেওয়া ‘মোখা’ নাম পায়।

Link copied!