কয়েকজন তরুণ-তরুণী টিকটকের জন্য ভিডিও ধারণ করছিলেন। এ সময় তাদের বাধা দেন গ্রামবাসীরা। কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি শুরু হয়। সেই থেকে ছুরিকাঘাত করা হয় একজনকে আর সেই খবর শুনে সংঘর্ষে জড়ায় দুই গ্রামের বাসিন্দা। সংঘর্ষকালে একজনকে সেতুর ওপর থেকে ২৫ ফুট নিচে ফেলে দিলে মৃত্যু হয় তাঁর।
টিকটক নিয়ে এই ঘটনাটির সূত্রপাত সুনামগঞ্জের ছাতকে।
নিহত যুবকের নাম ছয়ফুল আলম (৩৫)। তিনি ছাতক উপজেলার মুক্তিরগাঁও গ্রামের মৃত চমক আলীর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গতকাল বিকেলে ছাতকের সুরমা নদীর ওপর নির্মিত সুরমা ব্রিজে দুই তরুণী ঘুরতে যান। এ সময় দুই তরুণী ব্রিজের ওপর টিকটক ভিডিও ধারণ করতে গেলে ভাসখলা গ্রামের কয়েকজন তাতে বাধা দেন। এর মধ্যে মুক্তিরগাঁও গ্রামের কয়েকজন তরুণও সেখানে উপস্থিত হন। একপর্যায়ে দুই গ্রামের তরুণেরা বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতিতে জড়ান। মুক্তিরগাঁও গ্রামের মামুনকে ছুরিকাঘাত করা হয়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যা সাতটার দিকে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। সন্ধ্যা সাতটা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে সুরমা ব্রিজের গোলচত্বর এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। এ সময় দুই পক্ষের অন্তত ৬০ জন আহত হন।
রাত ১১টার দিকে ছাতক, দোয়ারাবাজার, শন্তিগঞ্জ থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১০১টি গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের ১৪টি শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি দোকান, একটি পিকআপ ভ্যান ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
এর মধ্যে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত ছয়ফুল আলমকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছুক্ষণ পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত সজিব, রাজ্জাক, জসিম, কুটিলাল, আফতাব উদ্দিনকে সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষের সময় দুই পক্ষের প্রায় এক হাজার থেকে ১২শ লোক জড়িয়ে পড়েন।
ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. মাঈনুল জাকির বলেন, দুই গ্রামের বাসিন্দাদের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে একাধিক থানার সহযোগিতা নিতে হয়েছে। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় কোনো পক্ষই থানায় লিখত অভিযোগ দেয়নি। এখনো এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। নিহত যুবকের লাশ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। দুই গ্রামের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।