স্মার্টফোন হ্যাক হওয়া, ট্যাপ করা, আড়ি পেতে কথোপকথন শোনা ইত্যাদি এখন একটি নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আপনার স্মার্টফোনটি দিয়ে আপনাকে নানা উপায়ে ট্র্যাক করা সম্ভব। তবে আপনি যদি এ বিষয়ে খেয়াল রাখেন তাহলে এর পরিমাণ কমিয়ে আনতে পারবেন।
ফোন ট্র্যাক হচ্ছে কি না বুঝবেন কীভাবে?
অনেকে ফোন ট্র্যাকিংয়ের কিছু লক্ষণ শনাক্ত করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ তারা লক্ষ্য করতে পারেন, ডিভাইসটি ধীর হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কর্মক্ষমতায় অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন দেখা যায়। তবে ট্র্যাকিং করা হলে তা সব সময় এত সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায় না।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুসারে, আপনি বিভিন্ন কোড ডায়াল করে দেখতে পারেন। যেগুলো ফোন ট্র্যাকিং করা হলে সম্ভাব্য কিছু প্রতিক্রিয়া দেখাবে। যেমন: *#61# লিখে ডায়াল করলে ইনকামিং কলগুলো অন্য কোনো নম্বরে ফরওয়ার্ড করা হয় কি না তা জানাবে। একইভাবে *#62# ডায়াল করে আপনি দেখতে পারবেন যে, কোনো ডাইভারশন সফ্টওয়্যার বিভিন্ন কল এবং টেক্সটকে আপনার কাছে পৌঁছাতে বাধা দেয় কি না।
ফোন ট্র্যাক করা থেকে কীভাবে বাঁচাবেন?
ফ্লাইট মোড চালু এবং জিপিএস লোকেশন সেটিংস নিষ্ক্রিয় করা ফোনের অ্যারোপ্লেন মোড ফিচারটি চালু করলে তা সেলুলার এবং ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কগুলোর সেই সংযোগগুলোকে বাধা দেয়, যেগুলো ট্র্যাকিংয়ে সাহায্য করে। প্রথমে ফ্লাইট মোড নির্বাচন করুন। তারপর আপনার ফোনের জিপিএস বা লোকেশন ফিচারটির অবস্থা পরীক্ষা করুন৷ ফ্লাইট মোড চালু করার পর প্রায়শই লোকেশন সেটিংস স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তবে এটি বন্ধ হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া ভালো।
কিন্তু এই ফিচারগুলো বন্ধ করলে আপনি কল বা মোবাইল ডেটার জন্য আপনার ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে ট্র্যাকিং বন্ধ করার জন্য এটি একটি দ্রুত উপায়। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্য এটি আদর্শ নয়।
অপারেটিং সিস্টেম সেটিংসের দিকে মনোযোগ দিন যারা অ্যাপভিত্তিক ট্র্যাকিং সম্পর্কে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন। তারা অপারেটিং সিস্টেম বা ওএস-ভিত্তিক সেটিংস থেকে এটিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন। অ্যাপলের আইওএস-এর সাম্প্রতিক সংস্করণগুলো সব ধরনের অ্যাপ কিংবা পৃথক অ্যাপের ক্ষেত্রে ট্র্যাকিং বন্ধ করার সুযোগ দিয়ে থাকে।
গুগলও সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েডের জন্য প্রাইভেসি স্যান্ডবক্স নামে অনুরূপ একটি ফিচারের ঘোষণা করেছে। এটি থার্ড পার্টির কাছে ব্যক্তিগত ডেটা স্থানান্তর সীমিত করে আনে। এ ছাড়া এটি সব অ্যাপে ট্র্যাকিং কার্যক্রম চলার অনুমতি দেয় না।
গোপনীয়তা-কেন্দ্রিক ব্রাউজার নির্বাচন ওয়েব ব্রাউজার হিসেবে বেশিরভাগ মানুষ গুগল ক্রোমকে তাদের পছন্দের শীর্ষে রাখে। তবে অনেকে বুঝতে পারে না যে এটি ব্যবহারকারীদের অনলাইন কার্যকলাপ ট্র্যাক করে থাকে। কিন্তু আপনি চাইলে বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে গুগলের ট্র্যাকিং ফিচারগুলো বন্ধ করতে পারবেন।
আরেকটি বিকল্প হল, এমন একটি ব্রাউজার ব্যবহার করা যা আপনাকে কম ট্র্যাক করে কিংবা একেবারেই ট্র্যাক করে না। এই ব্রাউজারগুলো অনুসন্ধানের সময় আপনাকে পার্সোনালাইজড ফলাফল দেবে না। যা ট্র্যাকারযুক্ত ব্রাউজারগুলো আপনাকে দিয়ে থাকে।
তথ্য: দ্য ডেইলি স্টার