বর্তমানে আমাদের সকাল শুরু হয় স্মার্ট ফোন হাতে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার নোটিফিকেশন চেক করে। শেষও হয় একই কাজ করে। আমাদের পুরো জীবনটাই যেন এখন আটকে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার কারাগারে। একারণে অস্থিরতা বেড়ে গেছে মানুষের মধ্যেও।
কিন্তু এই আসক্তি কমানোর উপায় কী?
মার্কিন সংবাদমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডা আমেরিকান সোসাইটি অব অ্যাডিকশন মেডিসিন-এর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে বলছে, ২০১৭ সালের এক গবেষণায় দেখা যায় প্রায় ৪৩ ভাগ আমেরিকান ক্রমাগত সোশ্যাল মিডিয়ায় আবিষ্ট থাকেন। যার মাঝে ২০ ভাগ মানুষের মানসিক অবসাদের উৎস হচ্ছে এই সোশ্যাল মিডিয়া।
তবে চাইলেই নিজেকে এই সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি থেকে দূরে রাখা যায় ।
২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা গড়ে ১৪৪ মিনিট সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যয় করে থাকেন। অথচ, গবেষকেরা বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় দৈনিক ৩০ মিনিট ব্যয় মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সর্বোত্তম। মাদক বা অ্যালকোহল আসক্তি থেকে পরিত্রাণের জন্য চিকিৎসা আছে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে বিষয়টি এক রকম নয়।
একমাত্র ইন্টারনেটের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ও নিজ উদ্যোগে কিছু কৌশলই পারে সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি থেকে একজন মানুষকে দূরে রাখতে।
সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি থেকে বিরত থাকতে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লিন স্টার্নলিচের দিক নির্দেশনা হতে পারে বেশ কার্যকারী ।
নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিজেকে বিরত রাখা - ২০১৯ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে , কিছু ছাত্র পাঁচ দিন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার থেকে বিরত ছিল। যা তাদের মানসিক স্থিতি ফিরিয়ে দিয়েছে। তাই এক ঘণ্টা বা এক সপ্তাহ বিরত থাকার অভ্যাস এই আসক্তি বেশ ভালো ভাবেই কাটিয়ে তুলতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি কমাতে আরেকটি উপায় হলো অ্যাপ মুছে ফেলা বা সোশ্যাল মিডিয়ার নোটিফিকেশন বন্ধ করে দেওয়া। কারণ, মোবাইল স্ক্রিনে চোখ পড়লে সোশ্যাল মিডিয়া আইকন দেখা না গেলে স্বাভাবিক ভাবেই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকা যাবে।
নিজেকে সময় বেঁধে দেওয়া হতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দূরে থাকার আরেকটি ভালো উপায়। বেশির ভাগ ফোন এবং ট্যাবলেটে দেখা যায় কোনো নির্দিষ্ট অ্যাপে কত সময় ব্যয় করা হচ্ছে । নিজেকে সময় বেঁধে দিন, দৈনিক কত সময় আপনি এতে ব্যয় করবেন ।
শখের কাজ গুরুত্ব দেওয়া বা অন্য কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেও আপনি নিজেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দূরে রাখতে পারেন। অন্যান্য ভালো লাগার কাজ গুলোয় বেশি সময় ব্যয় এই আসক্তি বেশ কমিয়ে আনবে।
এ প্রক্রিয়াগুলি অনেকের ক্ষেত্রে পুরোপুরি কাজ নাও করতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি কমাতে এ থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি নিজেকে দায়িত্বশীল হতে হবে।