ভুয়ো তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে ২২টি ইউটিউব চ্যানেলকে ‘ব্লক’ করে দিয়েছে ভারত। এছাড়া, তিনটি টুইটার হ্যান্ডল, একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং একটি সংবাদের ওয়েবসাইটকেও ব্লক করা হয়েছে।
দেশটির জাতীয় সুরক্ষা, বৈদেশিক সম্পর্ক এবং সরকার সম্পর্কে ভুয়ো তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে ওইসব চ্যানেল ব্লক করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার।
আনন্দবাজার, সংবাদ প্রতিদিন ও টইমস অব ইন্ডিয়াসহ বেশ কয়েকটি ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ব্লক করা চ্যানেলগুলির মধ্যে চারটি চ্যানেল পাকিস্তান থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। অন্যগুলো ভারত থেকেই পরিচালিত হয়ে আসছে।
কেন ব্লক করা হল?
মঙ্গলবার ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ব্লক করে দেওয়া ইউটিউব চ্যানেলগুলিতে একদিকে যেমন ভারতীয় সেনা বাহিনী, জম্মু ও কাশ্মীরকে নিয়ে ভুয়ো খবর দেওয়া হত, ঠিক তেমনই তা পাকিস্তান থেকে পরিচালিত একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে শেয়ার করা হত। ভারত বিরোধী ভুয়ো খবর পাকিস্তান থেকেই করা হত বলেও অভিযোগ করেছে মন্ত্রণালয়।
কেন্ত্রীয় তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘একাধিক ইউটিউব চ্যানেলে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী, জম্মু-কাশ্মীর-সহ বিভিন্ন বিষয়ে ভুয়ো খবর পরিবেশন করা হত। সেই চ্যানেলগুলোকে বন্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি সরাসরি পাকিস্তান থেকে একাধিক নেটমাধ্যম অ্যাকাউন্টে ধারাবাহিক ভাবে ভারত-বিরোধী খবর প্রকাশিত হচ্ছিল, সেগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই ইউটিউব চ্যানেলগুলিতে এমন ভাবে সংবাদ পরিবেশন করা হত যে, এক ঝলকে দেখে মনে হতে পারে, সেগুলি জনপ্রিয় কোনও ভারতীয় চ্যানেলের ইউটিউব সংস্করণ। আসলে, সে সবই ভুয়ো। এ ভাবেই অত্যন্ত পরিকল্পিত ভাবে ভারত-বিরোধী বিষয় ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ চলছিল।
এছাড়া, ওই চ্যানেলগুলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে খবরের সঙ্গে সেখানে ভারতকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করা হত। যা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের বৈদেশিক সম্পর্ক খারাপ করার জন্যই করা হত বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়াও ইউটিউব চ্যানেলগুলিক ভুয়ো খবরের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা এবং বিভ্রান্তি তৈরির অভিযোগও আনা হয়েছে।
ব্লক করে দেওয়া ইউটিউব চ্যানেলগুলির দর্শক সংখ্যা ছিল প্রায় ২৬০ কোটির মতো। এর আগে গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে ২০ টি ইউটিউব চ্যানেল এবং ২ টি ওয়েবসাইট ব্লক করে দিয়েছিল ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সেই সময়েও চ্যানেল ও ওয়েবসাইটগুলি পাকিস্তান থেকে পরিচালিত করা হত বলে অভিযোগ করা হয়েছিল।
ওইসব চ্যানেল এবং ওয়েবসাইটগুলিতে বিভাজনমূলক বিষয়বস্তু পোস্ট করা হত বলে অভিযোগ। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সম্পর্কিত বিষয় পোস্ট করে সংখ্যালঘুদের ভারত সরকারের বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছিল।