আয়েসী ভাব ছেড়ে সবাই সর্তক হোন: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ২৯, ২০২১, ০১:৩৬ এএম

আয়েসী ভাব ছেড়ে সবাই সর্তক হোন: প্রধানমন্ত্রী

সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে আয়েসী ভাব ছেড়ে দেশবাসীকে  আবারও সর্তক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভাণ্ডারে কম্বল গ্রহণ অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে যখনই শীতকাল আসছে পৃথিবীর সব দেশে আবার কিন্তু করোনা ভাইরাস দেখা দিচ্ছে। এমনকি ইউএসএ, ইংল্যান্ড বা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যে এর প্রার্দুভাব কিছুটা দেখা যাচ্ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

অসর্তক হলে দেশে আবারও করোনা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন দেখা যাচ্ছে করোনা নাই সবার মধ্যে একটু আয়েসি ভাব এসে গেছে। এখন সময় এসেছে আবার সর্তকতা অবলম্বন করার। আর সর্তকতা অবলম্বন করতে পারলে ইনশাল্লাহ এই প্রার্দুভাব আমাদের বাংলাদেশকে আক্রান্ত করতে পারবে না।’

‘শীতকাল আসলে একটু ঠান্ডা লাগলে সর্দি-কাশি হয়। আর সর্দি-কাশিটা হলেই কিন্তু এই করোনা ভাইরাসটা সেই দিকে সবাইকে একটু সর্তক থাকতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সমগ্র বাংলাদেশের মানুষকে এই ব্যাপারে সর্তক থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। যেন আবার এই করোনার প্রার্দুভাব না দেখা দেয়। সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে।’

সবাইকে মাস্ক পরার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাস্কটা অবশ্যই পরে থাকতে হবে। এই মাস্কটা পরে থাকলে পরে কেউ যদি সংক্রমিত হয়ে কথা বলতে আসে আপনি নিজে সংক্রমিত হবেন না।’

প্রতিষেধক টিকা নেওয়া ব্যক্তিরাও অন্যকে করোনা সংক্রমিত করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন যারা নিয়েছে যদি তাদের কারো করোনা হয় সে কিন্তু করোনাটা ছড়াতে পারে। নিজে হয়তো অত বুঝবে না কিন্তু দেখা যাচ্ছে সে অন্যকে সংক্রমিত করছে। এ বিষয়ে আমার মনে হয় দেশবাসীকে এখন থেকে আরও সর্তক হওয়া উচিত। আর এ বিষয়ে আরও প্রচার আমাদের দরকার, মানুষকে সর্তক করা। ’

শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সবাইকে আমলকি, আমড়া, লেবু, কমলা, জাম্বুরা, টমেটোসহ ভিটামিন সি যুক্ত শাক-সবজি বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে সবাইকে টিকা দেওয়া হবে

আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে সবাইকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতির কথা জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘ইতোমধ্যে টিকাদান কর্মসূচি যেটা চলছে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে আমরা সকল মানুষকে টিকা দিতে সক্ষম হবো।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কোন কোন মানুষ যেন বাদ না যায়, সকল নীতিমালা অনুযায়ী টিকা গ্রহণ করার মতো যোগ্য প্রত্যেকটা মানুষ টিকা পাবে সে ব্যবস্থাটা আমরা করেছি।’

স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরও টিকা দেওয়া হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টিকাদান কর্মসূচি চলছে সারা বাংলাদেশ ব্যাপী। পাশাপাশি আমাদের ছাত্র সমাজকে আমরা টিকা দিচ্ছি এবং স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদেরও আমরা টিকা দেবো। সে প্রস্তুতি আমরা ইতোমধ্যে নিয়েছি। দুই একদিনের মধ্যেই আমরা কাজ শুরু করবো।’

সরকার করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে সব কিছুতেই একটা স্থবিরতা সারা বিশ্বব্যাপী সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বাংলাদেশে আমরা সব সময় চেষ্টা করেছি যে বাংলাদেশে যেন কোন মতে কোন কিছু স্থবির না হয়, অন্তত সচল থাকে। সেদিক থেকে আমরা মনে করি বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে।’

অনুষ্ঠানে ৩৭টি ব্যাংক প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ ভান্ডারে মোট ২৬ লাখ ৪৫ হাজার পিস কম্বল এবং ১০ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে প্রদান করে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যাসলয় প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এসব অনুদান গ্রহণ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যােলয় প্রান্তে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংকস্ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ বিভিন্ন ব্যাংকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 

ব্যাংক মালিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষের যেকোন দুঃসময়ে দেখেছি আমাদের ব্যাংক এসোসিয়েশন সব সময় এগিয়ে আসে। প্রত্যেক ব্যাংকের পক্ষ থেকে সব সময় সহযোগিতা করে থাকেন। এমনকি এটা আমাদের বলারও প্রয়োজন হয় না আপনারা নিজেরা নিজেদের থেকে এগিয়ে আসেন মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য। সে জন্য আপনাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

Link copied!