দেশের বহুল আলোচিত রাজধানীর বনানীতে রেইনট্রি হোটেলে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলায় আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আজ মঙ্গলবার(১২ অক্টোবর) রায় ঘোষণা করা হবে।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারের আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করবেন।
গত ৩ অক্টোবর মামলাটি যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার এ দিন ঠিক করেন একই আদালত। মামলার অপর আসামিরা হলেন, সাফাতের তার বন্ধু সাদমান সাকিব ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিম এবং সাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন।
রাজধানীর রেইনট্রি হোটেলে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের মামলায় সাফাত আহমেদসহ (মাঝে) পাঁচ আসামি।
৩ অক্টোবর আসামিরা সবাই জামিনে থেকে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারক আসামিদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করেন । ওইদিন ৫ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে মামলাটির ৪৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর গত ২৯ আগস্ট আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর (রোববার) শুরু হয় যুক্তি উপস্থপন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ৬ মে বনানী থানায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
ওই বছর ৭ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলায় বলা হয়, আসামিদের মধ্যে সাফাত ও নাঈম ওই নির্যাতিত ছাত্রীদের বন্ধু। গত ২৮ মার্চ ঘটনার দিন ওই দুই ছাত্রী আসামি সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের যান। ওইদিন তাদের রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা আটকে রাখেন। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ একাধিকবার তাদের ধর্ষণ করেন। শুধু তাই নয়, ধর্ষণ করার সময় সাফাত গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করেন। ধর্ষিতরা ভয়ে এবং লোকলজ্জার কারণে এবং মানসিক অসুস্থতা কাটিয়ে উঠে ৬ মে বনানী থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
পরবর্তীতে ওই বছরের ৭ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক ইসমত আরা এমি আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করলে আদালত একই বছরের ১৩ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।