সার্জেন্ট মহুয়ার বাবাকেই দায়ী করে বিচারপতির ছেলের জিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বর ১৯, ২০২১, ০১:৪৬ এএম

সার্জেন্ট মহুয়ার বাবাকেই দায়ী করে বিচারপতির ছেলের জিডি

প্রাইভেট কার দুর্ঘটনায় পা হারানো সার্জেন্ট মহুয়ার বাবা মনোরঞ্জনের ওপরই দুর্ঘটনার দায় চাপিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন সেই বিচারপতির ছেলে। বিচারপতির ছেলের জিডিটি করা হয়েছে গত ১৪ ডিসেম্বর।

জিডিতে বিচারপতির ছেলে সাঈদ হাসান জানান, তার গাড়ি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়নি। বরং বেআইনিভাবে উল্টো দিক থেকে মনোরঞ্জনই তার গাড়িতে লাগিয়ে দেন। এতে তার ও তার স্ত্রীর প্রাণহানির মতো অবস্থা তৈরি হয়েছিল। উল্টো পথে মোটরসাইকেল চালানোর জন্য এই দুর্ঘটনার সম্পূর্ণ দায় মনোরঞ্জন ওপরই বর্তায়।

জিডিতে ঘটনার বর্ণনায় সাঈদ হাসান উল্লেখ করেছেন, গত ২ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাতে, মহাখালী ফ্লাইওভার থেকে নেমে চেয়ারম্যানবাড়ির ইউলুপ ঘুরছিলেন তিনি। এ সময় উল্টো দিক থেকে এসে মনোরঞ্জনের মোটরসাইকেলটি তার গাড়িকে ধাক্কা দেয়। এতে গাড়িটি সেখানেই প্রাচীরে লেগে যায় এবং প্রাণহানির ঘটনার সম্মুখীন হয়। এতে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও তার স্ত্রীর ডান হাতে তিনটি আঙ্গুল ফ্র্যাকচার (ভেঙে যায়) হয়।

সাঈদ হাসান আরও দাবি করেন, এ সংঘর্ষের পর মনোরঞ্জন হাজংকে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। সেখানে দুই দফায় আর্থিক সহযোগিতাও করেন। পরে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে অপারেশনের ব্যবস্থা, কেবিন বরাদ্দ, এমনকি মেডিকেল বোর্ড গঠন করাসহ যাবতীয় বন্দোবস্ত করেন। 

জিডিতে আরও বলা হয়, দুর্ঘটনায় তার কোনো দোষ না থাকায়, ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেয়নি আর গাড়িও আটক করেনি। অহেতুক হয়রানি, অপপ্রচার, মিথ্যা মামলা, মানসিক নির্যাতন, অর্থের জন্য চাপ দেওয়াসহ নানা আশঙ্কা থেকে প্রকৃত বিষয় উদ্ঘাটনের জন্য তদন্তে অনুরোধ জানান। 

সাঈদ হাসানের এমন জিডির পর ভুক্তভোগীর মেয়ে সার্জেন্ট মহুয়ার কাছে প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘অদ্ভুত, বিষয়টি সত্যি বড় অদ্ভুত।’ এসময় আলোচিত এ ঘটনায় জিডি করার চার দিন পর প্রকাশ হওয়ার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। 

সার্জেন্ট মহুয়ার দাবি, এই দুর্ঘটনার বিচার চেয়ে প্রথম থেকেই পুলিশ কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন তিনি। কিন্তু ঘটনার ১৪ দিন পর থানা-পুলিশ অজ্ঞাত আসামি দিয়ে মামলা নিয়েছেন। যদিও তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী থেকে উঠে আসা ওই নারী সার্জেন্টের অভিযোগ, সাঈদের বাবা একজন বিচারপতি। যার কারণে এই দুর্ঘটনা মামলা, জিডি নিয়ে এত কিছু হচ্ছে!  

এর আগে, ১৪ দিন ঝুলিয়ে রেখে গত ১৬ ডিসেম্বর বনানী থানা এজাহার হিসেবে নেয় মহুয়া হাজংয়ের অভিযোগ।

Link copied!