কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ৩, ২০২২, ০৩:৫৭ পিএম

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত

প্রতিবারের মতো কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় এবারও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভারী বর্ষণেও শোলাকিয়ায় চার লক্ষাধিক মুসল্লি এবার ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। সকাল থেকে মেঘলা আকাশের মধ্যে দূরদূরান্ত থেকে দলে দলে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। সকাল সোয়া নয়টার দিকে মাঠ কানায় কানায় ভরে যায়। সাড়ে নয়টার দিকে শুরু হয় ভারী বর্ষণ। তবে বৈরী আবহাওয়া ও প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও মাঠ ছেড়ে যাননি মুসল্লিরা।

অনেককে পলিথিন মাথায় দিয়ে ও মাটিতে বিছিয়ে নামাজ আদায় করতে দেখা যায়। দীর্ঘক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজে নামাজ শেষে আল্লাহর সন্তুষ্টিতে মোনাজাত করে যাঁর যাঁর বাড়িতে ফেরেন মুসল্লিরা। শোলাকিয়ায় এবার অনুষ্ঠিত হলো ঈদুল ফিতরের ১৯৫তম জামাত। শোলাকিয়া মাঠের রেওয়াজ অনুযায়ী বন্দুকের ফাঁকা গুলির মাধ্যমে সকাল ১০টায় জামাত শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লাখো মুসল্লির এ জামাতে ইমামতি করেন জেলা শহরের বড়বাজার মসজিদের ইমাম মাওলানা শোয়াইব বিন আবদুর রউফ।

নামাজ শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। দেশের সবচেয়ে বড় এই ঈদের জামাত নির্বিঘ্নে করতে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। মোতায়েন করা হয়েছিল র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং জেলা পুলিশের সহস্রাধিক সদস্য। মাঠের ভেতর ও বাইরে ছিল ৬৪টি সিসি ক্যামেরা, পুরো মাঠ পর্যবেক্ষণের জন্য ছিল চারটি ড্রোন। ছয়টি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের মাধ্যমে আগতদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়। এ ছাড়া মাঠের ভেতর-বাইরে পুলিশ বাহিনীকে সহায়তায় ছিল বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবক দল। নিরাপত্তার স্বার্থে কাউকে মুঠোফোন, ছাতা বা কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শুধু জায়নামাজ নিয়ে ঢুকে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। মুসল্লিদের যাতায়াতে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, দুই বছর মাঠ বন্ধ থাকায় এবার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ–উদ্দীপনা ছিল। যে কারণে অন্য বছরের তুলনায় অধিক মুসল্লির সমাগম ঘটেছে। এমনকি বৈরী আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও চার লক্ষাধিক মুসল্লি এবার শোলাকিয়ায় নামাজ আদায় করেছেন। 

জনশ্রুতি আছে, ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে ঈদগাহটি একসময় ‘সোয়া লাখিয়া’ থেকে ‘শোলাকিয়া’ ঈদগাহ মাঠ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তবে এ বিষয়ে অনেক ইতিহাসবিদের দ্বিমত আছে। আরেকটি মতে, মুঘল আমলে এখানকার পরগনার রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল শ লাখ টাকা। কালের বিবর্তনে ‘শ লাখ’ থেকে বর্তমান ‘শোলাকিয়া’ হয়েছে।

Link copied!