গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ীতে কলেজ কমিটিকে কেন্দ্র করে হাসান আলী নামে এক কৃষককে হত্যার দায়ে জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ আটজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক এ রায় প্রদান করেন। এ মামলায় অপর ৮ জনকে বেকসুর খালাস প্রদান করে বিজ্ঞ আদালত।এ ছাড়াও আরও দুজন আসামি পলাতক রয়েছেন।
দণ্ডিতরা হলেন-পলাশবাড়ী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম লেবু, উপজেলার সাবেক শিবির নেতা গোলাম মোস্তফা, সাবেক শিবির কর্মী আব্দুর রউফ ও আবু তালেব, সোনালি ব্যাংক কর্মচারী শাহ আলম, মিজানুর রহমান, জালাল উদ্দিন ও রংপুর জেলার পীরগঞ্জের ফারুক মিয়া। এরমধ্যে মিজানুর ও আবু তালেব পলাতক রয়েছেন।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ কেরে বাদী পক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে বিচারিক প্রক্রিয়া চলার পর আদালত আটজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও সাত বছর কারাদণ্ড দিয়েছে। এই মামলায় সাতজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম বাবু এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ রায় নিয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৯৯৯ সালের আগস্ট মাসে পলাশবাড়ী উপজেলার আমবাড়ি গ্রামের একটি কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগকে কেন্দ্র করে ওই কলেজের অধ্যাপক মো. আব্দুলের সঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম লেবুর বিরোধ দেখা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় জামায়াত নেতা নজরুলের লোকজন অধ্যাপক আব্দুলের ওপর হামলা চালায়। এসময় অধ্যাপক আব্দুলকে বাঁচাতে গেলে একই উপজেলার অ্যাম্বারই গ্রামের মমিন উদ্দিনের ছেলে হাসান আলীর ওপরও আসামিরা হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত হাসান আলীর ভাই আবুল কাশেম বাদী হয়ে ১৯৯৯ সালের ২৪ আগস্ট পলাশবাড়ী থানায় ১০ জনের নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
পরে তদন্ত শেষে ২০০০ সালের ৩১ মে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করে পলাশবাড়ী থানা পুলিশ।এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ২০২১ সালের ৩ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।