ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপনা থেকে আগাম অবসর চেয়ে আবেদন করেছেন বিভাগটির সহকারী অধ্যাপক সামিয়া রহমান। বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহমেদের বরাবর তিনি ওই আবেদন জানিয়েছেন।
বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহমেদ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলে, “উনি (সামিয়া রহমান) চাকরির বয়স শেষ হওয়ার একটু আগেই অবসরে যেতে চান। উনি বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছেন। আবেদনের কপিটি বিভাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এখন সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে সিন্ডিকেট কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটার উপর। বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির বয়স ৬৫ বছর। সে হিসেবে ২০৪০-৪৫ সাল পর্যন্ত ওনার চাকরির মেয়াদ আছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস সুত্রে জানা যায়, চার মাসের অর্জিত ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে যান সামিয়া রহমান। এখনও তিনি দেশের বাইরেই আছেন। গত ৩১ মার্চ তার ছুটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে মার্চ মাসের শুরুতে তিনি বিনা বেতনে আরও এক বছরের ছুটির জন্য আবেদন করেন। তবে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মঞ্জুর না করলে মার্চের শেষের দিকে তিনি আগাম অবসরের আবেদন করেন। তবে কবে তিনি এই আবেদন করেছেন, সেটি জানা সম্ভব হয়নি।
এক বছরের ছুটি মঞ্জুর না করার বিষয়ে অধ্যাপক মনসুর আহমেদ বলেন, “উনি তিন মাসের অর্জিত ছুটি নিয়ে বিদেশে গেছেন। এরপর উনি হঠাৎ করে বললেন, এক বছরের বিনা বেতন ছুটি প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তো এ নিয়ম নেই। তাই হয়ত এটি মঞ্জুর হয়নি।”
রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে জানা যায়, বিভাগ থেকে পাঠানো সামিয়া রহমানের আগাম অবসর আবেদনের কপির একটি নোট উপাচার্যের কাছে পাঠানো হয়েছে। উপাচার্যের সিদ্ধান্তের উপর পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ভর করছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান বলেন, ‘নোটটা তাহলে আসুক। তারপর দেখে বলা যাবে।”
প্রসঙ্গত, গত বছরের শুরুর দিকে সামিয়া রহমান আলোচিত হয়ে ওঠেন একাডেমিক গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির দায়ে পদাবনতির কারণে। ২৯ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট তাকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে পদাবনমন ঘটিয়ে সহকারী অধ্যাপক পদ দেয়। এ ছাড়া একই অপরাধে সামিয়ার গবেষণা প্রবন্ধের সহলেখক অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের দুই বছর পদোন্নতি রহিত করা হয়।
ওই শাস্তির সিদ্ধান্তে বলা হয়েছিল: ২০১৬ সালে সামিয়া ও মারজানের যৌথভাবে লেখা ‘এ নিউ ডাইমেনশন অফ কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার: এ কেস স্টাডি অফ দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ শিরোনামের আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। প্রবন্ধের প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা ছিল ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নামের একটি নিবন্ধের হুবহু নকল।
আরও পড়তে পারেন:
আমি নোংরা রাজনীতির শিকার হয়েছি: সামিয়া রহমান