তিস্তা ব্যারেজের সব গেট খুলে দিয়েছে ভারত, দেশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ২০, ২০২১, ১০:৪৬ এএম

তিস্তা ব্যারেজের সব গেট খুলে দিয়েছে ভারত, দেশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টির পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গজলডোবা ব্যারেজের ৪৪ টি গেটই খুলে দিয়েছে ভারত। ভারি বর্ষণ, উজানের ঢল ও গজলডোবার সব গেট খুলে দেওয়ায় হু হু করে বাড়ছে তিস্তার পানি। বর্তমানে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি।

বুধবার (২০ অক্টোবর) ভোর থেকে তিস্তার পানি বাড়ায় লালমনিরহাটের তিন উপজেলার তিস্তার চর এলাকায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর ধানক্ষেত।

এছাড়া, পানি বেড়ে যাওয়ায় ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে, এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীর পাড়ের বাসিন্দারা।

তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় পানি বেড়ে যাওয়ায় তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ওই এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এছাড়া পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা, ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে।

আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে তিস্তা শুকিয়ে জেগে উঠেছিল চর। কিছুদিন আগেও হাঁটুও ভিজত না তিন্তার পানিতে। তবে এখন পানিতে পরিপূর্ণ তিস্তা। কার্তিক মাসে এমনভাবে পানি বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাত থেকে তিস্তার পানি বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। বুধবার সকাল ৯ টায় ওই পয়েন্টে ৫৩ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপরে। তিস্তার পানি ক্রমেই বাড়ছে।

এদিকে, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার চর সিন্দুর্না ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মফিজার রহমান বলেন, এ শুষ্ক মৌসুমে এমন বন্যা আর দেখা যায়নি। গত দুমাস আগে এ নদী শুকিয়ে গিয়েছিল। আজ নদীতে ভরপুর পানি। অনেক বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। অনেক পরিবার উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।

পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম এলাকার মাইদুল ইসলাম বলেন, রাত থেকে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় ধানক্ষেতসহ রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করে অনেক পরিবার উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউ দৌলা জাগো নিউজকে বলেন, উজানের ঢলে ও ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ভারতের গজলডোবার ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। তাই তিস্তাপাড়ের মানুষদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জাগো নিউজকে বলেন, তিস্তার পানি বাড়ার বিষয়টা আমরা জেনেছি। পানিবন্দি পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য সহায়তা আছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য সহায়তার ব্যবস্থা করছেন।

Link copied!