এপ্রিল ৯, ২০২৩, ০৯:৩৭ পিএম
বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ উদযাপন উপলক্ষে ৫ দিনব্যাপী আলপনা অংকন কর্মশালার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। চারুকলা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় ৯-১৩ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এ কর্মশালা।
রবিবার (৯ এপ্রিল) প্রথম দিনের কর্মশালার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
আলপনা বাঙালি পরিচয়ের সন্ধানে শীর্ষক এ আয়োজনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, "বাঙালির হাজার হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্যের আত্মপরিচয় আছে, সেই জায়গাটি আরো শক্ত ভিত্তিতে তৈরী করে দিয়েছেন আমাদের শহীদরা। আমরা সব বাঙালি একই পরিবারের সদস্য। বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্যের লোকধারার সেই নান্দনিকতা প্রকাশেরই অন্যতম মাধ্যম এই আলপনা।" নান্দনিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই আলপনা অঙ্কন কর্মশালার আয়োজন বলে জানান শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক।
এর আগে আলপনা কর্মশালা বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য তুলে ধরেন চারুকলা বিভাগের পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিম মিনি। কর্মশালায় ঢাকা ও ঢাকার বাইরের জেলা থেকে ৫০ প্রশিক্ষণার্থী অংশ নিয়েছে। রাজবাড়ি থেকে আগত প্রশিক্ষণার্থী মুন্নি আখতার নিজের অনুভুতির কথা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে শিল্পকলা একাডেমির সচিব সালাহ উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, "আমাদের নিজস্ব শিল্পকলা মাধ্যম, আলপনাকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা বা পরিচিত করানোর পাশাপাশি এটা নিয়ে যে প্রকাশনা বের হতে যাচ্ছে এটা শিল্পকলা একাডেমির ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। মেহেদি হিসেবে আলপনার প্রচলন ঘরে ঘরে থাকলেও এই আয়োজনের মাধ্যমে গৃহ সজ্জা বা বাঙালির উৎসব আয়োজনে আলপনার নান্দনিক প্রচার সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক। শিল্পকলা বরাবরই ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করে, আলপনার বিষয়টিও শিল্পকলার মাধ্যমে আরো বিস্তার ঘটবে বলেও মত ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রথম দিনের কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান সঞ্জয় চক্রবর্তী এবং একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক রেজাউল হাশেম রাশেদ। কর্মশালা চলবে প্রতিদিন বিকাল ৩.০০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬.০০ টা পর্যন্ত। কর্মশালায় অংশ নেয়া ৫০ জন শিক্ষার্থীদের সকলকেই সনদপত্র প্রদান করা হয়। পরে অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষণার্থীদের নিয়ে ১৩ এপ্রিল চৈত্রসংক্রান্তিতে আলপনা কর্মশালার আনুষ্ঠানিক সমাপনী আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, আলপনা বা আলিপনা হল লেপন করে করা কারুকার্য; সাধারণত একটি বা দুটি রঙের সহজ বিমূর্ত রেখাচিত্র। উৎসবে বাড়ির চৌকাঠে-আঙিনায়, বিয়ের পিঁড়িতে, পূজা মণ্ডপে ইত্যাদি জায়গায় সাদা আলপনার খুব চল আছে অনেক আগে থেকে। এটি মূলত ক্ষণস্থায়ী লোকশিল্প। সমাজজীবনে প্রচলিত নানাবিধ অনুষ্ঠান ও গৃহসজ্জার জন্য আলপনা অঙ্কন করা হয়। এখনো সাধারণত বাংলা নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখে গ্রামীণ গৃহসজ্জায় নান্দনিকতা প্রকাশে আলপনা লেপন করা হয়ে থাকে।