অবৈধ পথে ইতালি: ভূমধ্যসাগরে লাশ হল ১৭ বাংলাদেশি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ২২, ২০২১, ০৫:০৩ পিএম

অবৈধ পথে ইতালি: ভূমধ্যসাগরে লাশ হল ১৭ বাংলাদেশি

অবৈধভাবে ইউরোপের ইতালি যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে একটি নৌকাডুবির ঘটনায় অভিবাসনপ্রত্যাশী ১৭ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এসময় তিউনিশিয়ার কোস্টগার্ড সদস্যরা ৩৮০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করে বলে বিশ্বের দুঃস্থ মানবতার সেবার নিয়োজিত আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রিসেন্ট তিউনিশিয়া শাখা জানিয়েছে।

তিউনিশিয়া রেডক্রিসেন্ট কর্মকর্তা মংগি স্লিমের বরাত দিয়ে স্থানীয় সময় বুধবার (২১ জুলাই) সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূল জুয়ারা থেকে অভিবাসপ্রত্যাশীদের নিয়ে ওই নৌকাটি ইউরোপের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে ভূমধ্যসাগরে তিউনিশিয়ার উপকূলে ডুবে যায়। পরে ওই ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে ১৭ বাংলাদেশির মরদেহ ও ৩৮০ জনকে উদ্ধার করা হয়।

বাংলাদেশসহ সিরিয়া, সুদান, মিশর, মালি ও ইরিত্রিয়ার এসব অভিবাসনপ্রত্যাশী লিবিয়া থেকে নৌকাযোগে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করছিল বলেও তিউনিশিয়ান রেডক্রিসেন্টের ওই কর্মকর্তা জানান।

কেন ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপ?

উন্নত জীবন আর বেকারত্বের অভিশাপ ঘোচাতে অবৈধভাবে যারা ইউরোপের দেশগুলোতে  প্রবেশ করতে চায়, তাদের জন্য সুবিধাজনক জায়গা হচ্ছে আফ্রিকার দেশ লিবিয়া। বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশের নাগরিকেরা উন্নত জীবন গড়া ও ভাগ্যের  চাকা বদলানোর উদ্দেশ্য নিয়ে নানা উপায়ে লিবিয়া পৌঁছে। তারপর দেশটির  জুয়ারা উপকূল  থেকে নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অনেকে ইতালি পৌঁছে থাকে। জীবনের  ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে নৌকাডুবিতে অনেকের মৃত্যু ঘটে।

নেীকাডুবির সাম্প্রতিক ঘটনাবলি  

গত ০৮ জুলাই অবৈধভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার সময় আফ্রিকার  তিউনিশিয়ার উপকূলে এবটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। ডুবে যাওয়া ওই নৌকা থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশী ৪৯ জন বাংলাদেশিকে তিউনিশিয়ার কোস্টগার্ড সদস্যরা উদ্ধার করে।

তিউনিশিয়ার নৌবাহিনীর তথ্য অনুযায়ি, উদ্ধার হওয়া ওই বাংলাদেশি অভিবাসন  প্রত্যাশীরা গত ৫ জুলাই লিবিয়ার জুয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপ যেতে নৌকায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন।

যাত্রা শুরুর ৩দিন পর তিউনিসিয়ার জারজিস উপকূল থেকে ৮০ মাইল দূরে নৌকাটি ভেঙে যায়। এতে কোনো উপায় না পেয়ে সেখানে একটি তেলের ট্যাংকারে আশ্রয় নেন বাংলাদেশি নাগরিকেরা। 

ওই সময় তিউনিসিয়ার নৌবাহিনীর টহলরত একটি নৌযান তাদের উদ্ধার করে জারজিসে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে ওইসব বাংলাদেশিকে  বেন গুয়ারদানে এল টেফ শহরে স্থানান্তর করা হয়।

এর আগে, ২০১৯ সালের মে মাসে লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে অন্তত ৪০ বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যু ঘটে।

অবৈধভাবে ইউরোপের দেশগুলোতে পৌঁছানোর পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনা বেড়েই চলেছে। অভিবাসন প্রত্যাশীদের ঠেকাতে ভূমধ্যসাগরে নজরদারি বাড়লেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকে সাগর পাড়ি দিচ্ছেন।

জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা- ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) তথ্যমতে চলতি বছরের জানয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত এই পাঁচ মাসে আফ্রিকা থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি ও মাল্টা যাওয়ার পথে পাঁচ শতাধিক অভিবাসন প্রত্যাশী মারা গেছেন।  

 

Link copied!