দেশে চলমান কঠোর লকডাউনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রবিবার (১১ জুলাই) গত ২৪ ঘন্টায় ২৩০ জন মারা গেছেন। এনিয়ে দেশে মোট ১৬ হাজার ৪১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (১১ জুলাই) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সবশেষ এসব তথ্য জানানো হয়। ১৮৫ জন মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কয়েক দিনের পরিংসখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, শনিবার গত ২৪ ঘন্টায় মারা যায় ১৮৫ জন। শুক্রবার (০৯ জুলাই) একদিনে ২১২ জন মারা গেছেন। একদিনে এত বেশি মানুষের মৃত্যু এর আগে কখনও দেখেনি বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার গত ২৪ ঘন্টায় মারা যায় ১৯৯ জন। বুধবার (০৭ জুলাই) গত ২৪ ঘন্টায় দেশটিতে ২০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিন গত ২৪ ঘন্টায় এত বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যু দেখেছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (০৬ জুলাই) একদিনে ১৬৩ জনের মৃত্যু হয়। সোমবার (০৫ জুলাই) গত ২৪ ঘন্টায় দেশে মারা যায় ১৬৪ জন। রবিবার (০৪ জুলাই) একদিনে ১৫৩ জনের মৃত্য হয়। শনিবার (০৩ জুলাই) ১৩৪ জন, শুক্রবার (২ জুলাই) ১৩২ জন, বৃহস্পতিবার ১৪৩ জন ও বুধবার (৩০ জুন) ১১৫ জনের মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রবিবার (১১ জুলাই) গত ২৪ ঘন্টায় ৪০ হাজার ১৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৮৭৪ জন। এনিয়ে দেশে মোট শনাক্ত হলেন ১০ লাখ ২১ হাজার ১৮৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় দৈনিক পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের শতকরা হার ২৯ দশমিক ৬৭।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গত কয়েকদিনের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, শনিবার শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৭৭২ জন। শুক্রবার (০৯ জুলাই) গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৩২৪ জন। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) একদিনে শনাক্ত হয় ১১ হাজার ৬৫১জন। করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার শুরু থেকে এপর্যন্ত একদিনে এত বেশি মানুষের শনাক্ত এই প্রথম দেখেছে বাংলাদেশ। এর আগে সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৫২৫ জন শনাক্ত হয়েছিল গত ০৬ জুলাই।
বুধবার (০৭ জুলাই) করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছিলেন ১১ হাজার ১৬২ জন। মঙ্গলবার (০৬ জুলাই) করোনায় শনাক্ত হয় ১১ হাজার ৫২৫ জন। সোমবার গত ২৪ ঘন্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৯৬৪ জন। রবিবার (০৪ জুলাই) একদিনে শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৬৬১ জন। শনিবার হন ৬ হাজার ২১৪ জন। শুক্রবার (২ জুলাই) গত ২৪ ঘন্টায় এই সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৪৮৩। বৃহস্পতিবার গত ২৪ ঘন্টায় ৮ হাজার ৩০১ জন ও বুধবার (৩০ জুন) গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হন ৮ হাজার ৮২২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাসপাতাল ও বাসা বাড়িতে চিকিৎসা সেবায় রবিবার (১১ জুলাই) গত ২৪ ঘন্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৩৬২ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৭৪ হাজার ৫০১ জন।
শনিবার (১০ জুলাই) গত ২৪ ঘন্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৭৫৫ জন।শুক্রবার (০৯ জুলাই) গত ২৪ ঘন্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৩৮ জন। বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৮৪৪ জন। বুধবার গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছিলেন ৫ হাজার ৯৮৭ জন।
২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। গত ৩১ মে করোনাভাইরোসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের সংখ্যা ৮ লাখ পেরিয়ে যায়। গত ২৯ জুন শনাক্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় ৯ লাখ। ওই দিন পর্যন্ত দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ৪ হাজার ৪৩৬ জন। আর শনাক্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়ায় শুক্রবার (০৯ জুলাই)। ওইদিন পর্যন্ত দেশে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন ১০ লাখ ৫৪৩ জন।
গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। চলতি বছরের ১১ মে মৃত্যুর সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। আর গত শুক্রবার ১১ জুন দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৩ হাজার ছাড়িয়ে যায়। ২৬ জুন দেশে করোনায় মৃত্যু ছাড়ায় ১৪ হাজার। আর মৃত্যুর সংখ্যা ১৫ হাজার পার করে সোমবার (৫ জুলাই)। ওইদিন পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ হাজার ২২৯-এ। আর মাত্র ৪ দিনের ব্যবধানে শুক্রবার (০৯ জুলাই) মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় ১৬ হাজার। ওইদিন পর্যন্ত দেশে ১৬ হাজার ৪ জনের মৃত্যু হয়।