এপ্রিল ১, ২০২৩, ১২:০০ পিএম
বাংলাদেশে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ) বা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ স্থগিত করার পাশাপাশি এই আইনে দায়ের হওয়া সব মামলা পর্যালোচনার জন্য একটি বিচার বিভাগীয় প্যানেল গঠনের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভোলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের প্রতি এই আহবান জানান। জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তর গতকাল ওই বিবৃতি প্রকাশ করে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বাংলাদেশে গণমাধ্যমে গ্রেপ্তার অব্যাহত থাকার পটভূমিতে মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার এই আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার এই আইনের অপপ্রয়োগ ঠেকানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও ওই আইনে গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে বলে বিবৃতিতে জানান, হাইকমিশনার ভোলকার তুর্ক।
ডিজিটাল নিরপত্তা আইনের অপপ্রয়োগে উদ্বেগ জানিয়ে ওই বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সারা বাংলাদেশে সাংবাদিক ও মানবাধিকার রক্ষাকারীদের গ্রেপ্তার, হয়রানি ও ভয় দেখানো এবং অনলাইনে সমালোচনামূলক কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি এ নিয়ে উদ্বিগ্ন।”
ডিএসএ সংস্কারের আহবান জানিয়ে ভোলকার তুর্ক বলেন, “আমি আবারও কর্তৃপক্ষকে ওই আইন প্রয়োগ স্থগিত করার এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করার জন্য আইনটিকে ব্যাপকভাবে সংস্কার করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমার দপ্তর এরই মধ্যে এ ধরনের সংশোধনে সহায়তা করার জন্য বিশদ কারিগরি মন্তব্য প্রদান করেছে।”
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দপ্তরের বিবৃতিতে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, প্রতিবেদক শামসুজ্জামানসহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর আইনটি কার্যকর হওয়ার পর থেকে দুই হাজারেরও বেশি মামলা করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ফেসবুকে একটি পোস্টে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে পরিতোষ সরকার নামের এক যুবককে এই আইনে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
হাইকমিশনার তার বিবৃতিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সব মামলা পর্যালোচনার জন্য একটি বিচার বিভাগীয় প্যানেল গঠনের আহ্বান জানান। পাশাপাশি ‘অধিকার’-এর আদিলুর রহমান খান ও নাসিরুদ্দিন এলানের চলমান বিচারের বিষয়েও তাঁর উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করেন।