ধর্মঘটের তৃতীয় দিনেও রাজধানীসহ সারা দেশে বিআরটিসির বাস ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু থেমে নেই যানজট, ফলে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী ও সাধারণ মানুষ। রবিবার (৭ নভেম্বর) সকাল থেকে সরেজমিনে রাজধানীর রামপুরা, বাংলামোটর, পান্থপথ ও ফার্মগেট এলাকা ঘুরে রাস্তায় সিএনজি, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, রিকশার কারণে ব্যাপক জট লেগে আছে।
কয়েকজন পথচারী, কর্মজীবী ও অফিসগামীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল সাড়ে সাতটা থেকে সড়কগুলোতে যানজট শুরু হয়। অনেকেই বাধ্য হয়ে হেঁটে নিজ নিজ গন্তব্যে গেছেন, অনেকে রিকশা-ভ্যান ভাড়া করে যাচ্ছেন।
দেলোয়ার নামে এক কর্মজীবী দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে জানান, গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও মানুষকে নিজ নিজ কর্ম করতে হচ্ছে। অফিস যেতে হচ্ছে। তাই গণপরিবহণের বদলে অন্য যানবাহন ব্যবহার করতে হচ্ছে তাই এমন যানযটের সৃষ্টি হচ্ছে।
বাপ্পু মাহমুদ নামে এক চাকুরিজীবি দ্যা রিপোর্ট ডট লাইভকে জানান, অফিস যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে দেড় ঘণ্টা বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থেকে পাঠাও নিয়েছেন দামাদামি করে। তিনগুণ ভাড়া দিয়ে অফিস যাচ্ছেন কিন্তু জ্যামের কারণে আজও অফিস যেতে দেরি হবে। রাস্তায় গণপরিবহন নেই কিন্তু আছে যানজট।
যানজটের বিষয়ে সিএনজি চালক বোরহান উদ্দিন জানান, ভাড়া বেশি না রাইখা কি করমু মামা, যে যানজট। আমাগো তো আয় রোজগার করা লাগবো। মহাখালি থেকে যাত্রী নিয়ে মতিঝিল গেছি দেড় ঘণ্টায়। যাত্রীও বিরক্ত, সাথে আমিও। বেশি ভাড়া না নিলে পোষায় না মামা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ধর্মঘটের সুযোগে অনলাইন অ্যাপভিত্তিক পরিষেবা বেড়ে গেছে। রাজধানীর রাস্তায় বেড়েছে প্রাইভেটকার, সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ বাইকের আনাগোনা। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের।
সাধারণ যাত্রীদের দাবি, একদিকে গণপরিবহন নেই, আরেকদিকে যেসব পরিবহন চলছে, তাতে বাড়তি ভাড়া আদায়; অন্যদিকে ব্যাপক যানজটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বগতির কারণে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ডিজেল-কেরোসিনের দাম পুনর্নির্ধারণ করেছে সরকার।
গত বুধবার রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়। নতুন দাম ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছে। ডিজেল-কেরোসিনের দাম বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরদিনই পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপর গত শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট।