মে ২, ২০২৩, ০৮:৫০ এএম
দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও দাবদাহ দেখা গেল এই বছর। বৃষ্টির অপেক্ষায় বুভুক্ষু হয়ে ছিল বাংলার মাটি-নদী-ঘাট। এই তীব্র দাপদাহের প্রভাব ইতিমধ্যে দেখা যাচ্ছে চোখের সামনেই। দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতে এই প্রজনন মৌসুমেও অনুকূল পরিবেশ তৈরি না হওয়ায় ডিম ছাড়েনি কার্পজাতীয় মা মাছ।
প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে বজ্রপাতসহ মুষলধারে বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল নামলেই মা মাছের ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। এ সময়টিকে হালদা নদীতে মাছের প্রজনন মৌসুম বলা হয়। হালদা নদীর পানির তাপমাত্রা ২০ থেকে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে ভালো। তবে বর্তমানে তাপমাত্রা ৩২ দশমিক ৪ থেকে ৩৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। সেই সঙ্গে পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ অনেক বেশি। এই কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ডিম ছাড়ার দুটি উপযুক্ত সময় চলে গেলেও কার্পজাতীয় মা মাছ ডিম ছাড়েনি বলে জানান গবেষকরা।
তারা আরও জানান, ঝড়বৃষ্টি হলে, আকাশ গুড়ুম গুড়ুম ডাকলে চিত্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে মাছদের। তখন তারা ডিম পাড়তে শুরু করে। কিন্তু বৃষ্টিহীন প্রকৃতি ও দাবদাহের কারণে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ছে না। এই প্রজনন মৌসুমে রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউশ প্রজাতির মা মাছ ডিম ছাড়ে হালদায়।
হালদা গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এ রকম দাবদাহ হয়নি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হালদায় ইদানিং ডিম না ছাড়ার ঘটনা খুব বেশি ঘটছে।
তবে এতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে অপেক্ষায় থাকা হালদার ডিম সংগ্রহকারীদের।
প্রকৃতির ওপর কারও হাত নেই উল্লেখ করে হাটহাজারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিদুল আলম বলেন, গত ফেব্রুয়ারি থেকে ডিম সংগ্রহকারীদের সাথে যোগাযোগ করে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া হ্যাচারি ম্যানেজমেন্টের যে বিষয়গুলো আছে, আমরা তা পুরোপুরি প্রস্তুত রাখছি।
পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলে আগামী ৪ মে থেকে ৮ মে, ১৬ থেকে ২২ মে, ১ থেকে ৬ জুন, ১৬ থেকে ১৯ জুন মা মাছের ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।