আগস্ট ১৭, ২০২৪, ০১:২৬ পিএম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আবু সাঈদসহ সব শহীদ ছাত্রের স্মরণে এবং খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তির জন্য আয়োজিত দোয়া মাহফিলে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী, আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য ও উপজেলার ছয়ফুল্লাহকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান হযরত আলী, বিএনপির কর্মী ফারুক আহমেদ, মো. আলাউদ্দিন, সোহেল মিয়া ও বাবুল মিয়া।আহতরা বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, বাঞ্ছারামপুরে উপজেলা বিএনপির নেতৃত্ব ও কমিটি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এক পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়া আবদুল খালেক। তিনি পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। আরেকটি পক্ষে নেতৃত্বে রয়েছেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান (পলাশ)। উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাদের নেতৃত্বে দুই ভাগে বিভক্ত।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছয়ফুল্লাহকান্দিতে দোয়া মাহফিল আয়োজন করে ছয়ফুল্লাহকান্দি ইউনিয়ন বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠন। এতে আবু সাঈদসহ সব শহীদ ছাত্রের স্মরণে এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির কামনা করা হয়। অনুষ্ঠানে আবদুল খালেকের অনুসারী ছয়ফুল্লাহকান্দি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য হযরত আলীসহ ইউনিয়ন বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে যোগ দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য রফিক সিকদার ও অন্য নেতা-কর্মীরা।
এ সময় মেহেদী হাসানের পক্ষের উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী ফরিদ ও তার লোকজন সেখানে দোয়া মাহফিলে বাধা দেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার এক পর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। ধাওয়া খেয়ে রফিক সিকদারসহ অন্যরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৮-১০ জন আহত হন।
এ বিষয়ে ছয়ফুল্লাহকান্দি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হযরত আলী গণমাধ্যমকে বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের অনুষ্ঠান চলছিল। একপর্যায়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী ফরিদ তার ভাতিজা উপজেলা যুবলীগের নেতা রাজীব আহমেদসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের এনে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। এতে আমি, উপজেলা বিএনপির কর্মী সোহেল আহমেদসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “কেন এই আয়োজন করেছি, সে জন্যই তারা হামলা চালিয়েছে। এখন হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আবু সাঈদের ব্যানার রক্ষা করা কি আমার পাপ, নাকি অন্যায়। তারা আবু সাঈদের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছে। জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে ধাওয়া করে তাদের ওপর হামলা করে।”
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী ফরিদ বলেন, “বৃহস্পতিবার বিকেলে হাতাহাতির এক পর্যায়ে আমাদের ওপর হামলা হয়। আমরা কিছুই করতে পারিনি। আমি আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছি। যারা হামলা করেছে, তারা আওয়ামী লীগের লোকজন। এখন তারা নিজেদের নামধারী বিএনপির নেতা পরিচয় দেয়।”
এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন বলেন, “বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে একটু ঝামেলা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় উভয় পক্ষের কেউই কোনও অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”