সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩, ০৭:৫৬ পিএম
‘জিয়াউর রহমান একমাত্র সেক্টর কমান্ডার যিনি কোন যুদ্ধক্ষেত্রে যান নাই’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযোদ্ধা বলা যায় না। আর যদি তাকে মুক্তিযোদ্ধা বলতেই হয় তাহলে তাকে ঘটনাক্রমে মুক্তিযোদ্ধা বলতে হবে যিনি অস্ত্র হাতে শত্রুকে আক্রমণ করেননি। করবেই বা কেনো ওরা (পাকিস্তানি) তার শত্রু নয় বন্ধুই ছিল।’
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২৬তম বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে জাতীয় ও ছাত্রলীগের দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র বলেন, লন্ডনে বসে তারেক জিয়া মনোনয়ন বাণিজ্য করেন। এক আসনে দুই তিন জনের কাছ থেকে টাকা নেন কিন্তু মনোনয়ন দেন একজনকে। বাকিদের টাকাও ফেরত দেন না। তিনি নির্বাচন আসলে খোঁজ করেন কোন আসনে কতজন অর্থশালী প্রার্থী আছেন।
বিএনপির প্রসঙ্গ টেনে এনে লিটন বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর বিএনপি আর নির্বাচনে আসতে চায় না। নির্বাচনের সময় আসলে তারা নানা বাহানা শুরু করে। নির্বাচন করবে না, নির্বাচন হতে দেবে না, এসব কথা বলে। রাজনৈতিকভাবে তারা নির্বাচন না করতেই পারে। কিন্তু নির্বাচন হতে দেবে না, এই কথায় আমার ঘোর আপত্তি আছে। এই দেশ তাদের বাপের সম্পত্তি না।
মেয়র আরও বলেন, ছাত্রলীগের অসংখ্য অর্জনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ অর্জন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা। শুধু জয় বাংলা স্লোগান দিলেই হবে না, পড়ালেখাও করতে হবে। ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী থাকলে তাদেরকে পদে না আনার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, অনেক সময় নেতিবাচক ছাত্ররাজনীতি খবরের শিরোনাম হয়, যা আমাদেরকে কষ্ট দেয়। কারণ আমরা জানি, রাজনীতি যারা করবে তারা হবে সবচেয়ে সৎ, সাহসী ও মেধাবী। তারা গোটা ছাত্রসমাজের সামনে আইকনিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে থাকবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় পত্রিকা খুললে সিট বাণিজ্যে, প্রশ্ন ফাঁস ও বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার খবর আমাদের সামনে আসে। আমরা কোন অবস্থাতেই এটা প্রত্যাশা করি না। হলের আবাসন সমস্যাকে পুঁজি করে ছাত্র রাজনীতি করা ছাত্রলীগের কাজ না। হলের আবাসন সমস্যা সংকট দূর করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগকে আহ্বান জানান তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জয়পুরহাট ২ আসনের সাংসদ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব হাতে গোনা কয়েকজন। রাজশাহীতে ছাত্রলীগ করা আর মরুভূমিতে ফুলের বাগান করা প্রায় সমান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস প্রায়শই ঘাতকের নির্মম আঘাতে আমাদের সোনার ছেলেদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অংশগ্রহণ খুবই কম। তাই এখানকার ছাত্র নেতাদের ভবিষ্যতে বিবেচনায় রাখার জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। সঞ্চালনা করেন রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, বিশেষ বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ হীল বারী, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন রনি, উপ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক মো. সাব্বির হোসেন, সহ-সম্পাদক আদনান হোসেন।