ইয়াসের গতিপথ পরিবর্তনে ৪ জেলায় ক্ষতির আশঙ্কা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ২৪, ২০২১, ০৬:৪৯ পিএম

ইয়াসের গতিপথ পরিবর্তনে ৪ জেলায় ক্ষতির আশঙ্কা

অনুকূল আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। ২৬ মে বুধবার ভোর নাগাদ উত্তর উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের খুলনা উপকূলের কাছ দিয়ে উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় পৌঁছাতে পারে। যার ফলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও বরগুনা জেলায়। গতিপথ পরিবর্তন করায় এসব এলাকার উপর দিয়ে ঝড় বয়ে না গেলেও দমকা হাওয়াসহ প্রচুর বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এই চার উপকূলীয় এলাকা। আবহাওয়া অফিসসূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

২৪ মে সৃষ্টি হয় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস

সোমবার (২৪ মে) ভোরে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের। ঝড়টির বাতাসের গতিবেগ ৮৮ কিলোমিটার। তবে এটি আগের অবস্থান থেকে সামান্য সরে গেছে। এজন্য এখন বাংলাদেশের তুলনায় ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে ঝড়টি আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর। যদি আবারও ঘূর্ণিঝড়টি দিক পরিবর্তন করে তাহলে বাংলাদেশের উপকূলের দিকেও আসতে পারে। এক্ষেত্রে ঝড়টি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও বরগুনা জেলাকে আঘাত করতে পারে।

এখন ঝড়ের কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ৬২ কিলোমিটার। এই গতিবেগ দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের কাছের সাগর বিক্ষুব্ধ অবস্থায় আছে। দেশের চার সমুদ্র বন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে ২ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

২৫ মে থেকে প্রভাব পড়বে

আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন বলেন, ‘আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার দিনগত মধ্যরাত থেকে এই ঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করবে উপকূলীয় জেলাগুলোতে। ঝড়টি কিছুটা গতিপথ পরিবর্তন করায় এখন বাংলাদেশের দিকে না এসে ভারতের উড়িষ্যার দিকে যাচ্ছে। তবে যেকোনও সময় এই ঝড়ের গতিপথে পরিবর্তন ঘটতেও পারে। ঝড় এলে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও বরগুনা জেলা লণ্ডভণ্ড হবে, আর না এলেও এর প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়বে এই চার জেলা।’

আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত বিশেষ সতর্ক বার্তায় বলা হয়, পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে এবং এর আশপাশের এলাকায় সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ইয়াস দুপুর পর্যন্ত প্রায় একই এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৬৮৫ কিলোমিটার থেকে কিছুটা এগিয়ে ৬৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। কক্সবাজার থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এগিয়েছে। কিন্তু মোংলা ও পায়রা থেকে একই দূরত্বে আছে এখনও। মোংলা বন্দর থেকে  ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা বন্দর থেকে ৬০৫  কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভাষ্য

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঝড়টি ভারতের আন্দামানের পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৬০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থান করছে। একইভাবে উড়িষ্যার প্যারাদ্বীপ থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে, বালাসোর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে এবং পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব দীঘা থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে।

তারা বলছে, এটি খুব সম্ভবত উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হবে। এরপর আরও শক্তিশালী হয়ে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এটি যত উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে থাকবে, আরও তীব্র হবে এর গতি। ২৬ মে উত্তর উড়িষ্যা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাতে পারে। ২৬ মে সকালেই উত্তর উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ প্যারাদ্বীপ অতিক্রম কর‍তে পারে। ২৬ মে সকালে ইয়াস সুপার সাইক্লোনে পরিণত হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর।

Link copied!