এপ্রিল ১৭, ২০২২, ০৯:৩৪ পিএম
মুজিবনগর দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য দেওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্র সমাজে তোলপাড় চলার মধ্যে ক্ষমা চেয়েছেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও আওয়ামীপন্থী নীল দলের নেতা অধ্যাপক এম রহমত উল্লাহ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও আওয়ামীপন্থী নীল দলের নেতা অধ্যাপক এম রহমত উল্লাহ।ছবি: সংগৃহীত
রবিবার রাতে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ বলেন, "কেউ কেউ বলছেন আমি বঙ্গবন্ধুর খুনি মোশতাকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছি। বিষয়টি এমন নয়, আমি শ্রদ্ধা জানিয়েছি মুজিবনগর সরকারের প্রতি। ব্যক্তিগতভাবে মোশতাকের যে হীন কর্মকাণ্ড রয়েছে তার সমালোচনা করেছি এবং তার প্রতি নিন্দাও জানিয়েছি।"
ঢাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির এই সভাপতি আরও বলেন, "মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রণালয়গুলো কাদের মাঝে ভাগ হয়েছিলো এবং পরবর্তীতে তাদের কর্মকাণ্ড ব্যাখ্যা করেছি। ইতিহাসে মোশতাকের হীন কাজের কথা উল্লেখ আছে আমি তাও উল্লেখ করেছি। ইতিহাস বিকৃত করার ইচ্ছে এবং সাহস কোনোটিই আমার নেই।"
"যদি কেউ আমার বক্তব্য ভুল বুঝে থাকেন তবে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।”
প্রসঙ্গত, রবিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় খুনী খন্দকার মোশতাকের প্রতি শিক্ষক সমিতির সভাপতির এই বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও ছাত্র সমাজে তোলপাড় শুরু হয়।
আলোচনা সভায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। সমিতির সভাপতির বক্তব্যকে ধৃষ্টতাপূর্ণ উল্লেখ করে অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী।
অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, "ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনায় এ ধরনের কার্যক্রম ধৃষ্টতাপূর্ণ ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও যদি এমন কাজকে রুখে দেওয়া না হয় তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেউই এটি মেনে নিবে না।"
মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসেবে বক্তব্য দিতে এসে এম রহমত উল্লাহ তার লিখিত বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, “আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের জাতীয় চার নেতা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী খন্দকার মোশতাকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।”
অধ্যাপক এম রহমত উল্লাহর বক্তব্যের পরপরই তীব্র প্রতিবাদ জানান উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ।
তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খন্দকার মোশতাকের মত ব্যাক্তির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি এই বক্তব্য অবিলম্বে এক্সপাঞ্জ করার আবেদন জানাচ্ছি।” এরপর উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান তার সভাপতির বক্তব্যে সমিতির সভাপতির বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া।