ষোল কোটি মানুষের দেশে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা ১৭ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। আর ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১১ কোটির বেশি মানুষ। বিটিআরসির সবশেষ ডিসেম্বর মাসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য উঠে এসেছে। কিন্তু টেলিযোগাযোগ বাড়লেও ইন্টারনেট ব্যবহারে ধীরগতির কারনে এখন সকল সুবিধা পাচ্ছে না গ্রাহকরা।
বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্যসংঘ দিবস
১৭ মে (সোমবার) বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্যসংঘ দিবস। বরাবরের মত বিশ্বের ১৯৩ টি দেশে পালিত হচ্ছে এই দিবসটি। ২০২১ সালে এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য `প্রতিকূল সময়ে দ্রুততম ডিজিটাল পরিবর্তন’। করোনা মহামারীর কারনে কোন সারাবিশ্বেই প্রতিকূল অবস্থা দেখা দেয়। এর ফলে তথ্য সরবারহের ক্ষেত্রে নতুন নতুন মাধ্যমের প্রয়োজন হয়। এমন প্রতিকূল অবস্থার আগে নতুন ডিজিটাল মাধ্যমের সাথে সকলের পরিচয় করার লক্ষ্যেই এবারের প্রতিপাদ্য ঘোষণা করা হয়।
দেশে অপারেটর ভিত্তিক গ্রাহক কত ?
বিটিআরসির প্রতিবেদনে দেখা যায়, ডিসেম্বর শেষে দেশে মোবাইল ফোনের গ্রাহক সংখা দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি এক লাখ ৩৭ হাজার। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের ৭ কোটি ৯০ লাখ ৩৭ হাজার, রবির ৫ কোটি ৯ লাখ ১ হাজার, বাংলালিংকের ৩ কোটি ৫২৩ লাখ ৭২ হাজার এবং টেলিটকের ৪৯ লাখ ২৭ হাজার।
অপর দিকে, ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ১১ কোটি ১৮ লাখ ৭৫ হাজার। এর মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট ১০ কোটি ২৩ লাখ ৫৩ হাজার, আইএসপি ও পিএসটিএন ৮৫ লাখ ২২ হাজার।
ইন্টারনেটে ধীরগতি
ইন্টারনেট গতি মাপার আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ওকলার এক প্রতিবেদন বলছে, মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৬ নম্বরে। তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গতিতে বাংলাদেশ ১৭৫টি দেশের মধ্যে ৯৬ নম্বরে অবস্থান করছে।
একটি দেশে মোবাইল ও ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি কেমন, সেটি নির্ধারণে ‘স্পিডটেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্স’ নামের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওকলা। তাদের সর্বশেষ জানুয়ারি মাসের প্রতিবেদনে মোবাইল ইন্টারনেটের গতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের গড় ডাউনলোড গতি ১০ দশমিক ৫৭ এমবিপিএস এবং আপলোডের গতি ৭ দশমিক ১৯ এমবিপিএস। প্রতিবেশী দেশের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে বাংলাদেশের পেছনে আছে শুধু আফগানিস্তান ১৪০ নম্বরে।
ধীরগতির কারন কি?
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরগুলোর যে পরিমাণ গ্রাহক রয়েছে, সে হিসেবে তাদের স্পেকট্রাম বা বেতার তরঙ্গ ব্যবহারের পরিমাণ কম। গত এক বছর বাংলাদেশে ব্যান্ডউইথের ব্যবহার দুই গুণ বেড়েছে। কিন্তু এর সাথে মানিয়ে নিতে টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা অর্থাৎ তাদের বেতার তরঙ্গের ব্যবহার সে অনুপাতে বাড়েনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা টুজি থেকে থ্রিজিতে আসতে ২৪ বছর সময় নিয়েছি। ২০১৩ সালে থ্রিজি আসার ৫ বছরের মাথায় ২০১৮ সালে আমরা ফোরজিতে আসি। ২০১৯ সালে অপারেটরগুলো প্রস্তুতিমূলক কিছু কাজ করেছে। ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের কারণে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজ সেভাবে এগোয়নি।
তবে চলতি বছরের মার্চে নিলামের পর ইন্টারনেট গতি বেগবান হয়েছে বলে জানান তিনি। এবং ভবিষতে আরও বেশি উন্নত হবে।