ডাকাতির পর ২ নারীকে ধর্ষণের দায়ে ৫ ডাকাতকে ২ বার করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক মঈন উদ্দিন এ রায় দেন।
চট্টগ্রামর কর্ণফুলী থানার বড় উঠান ইউনিয়নের এক প্রবাসীর বাড়িতে ঢুকে ডাকাতির পর ২ নারীকে ধর্ষণের মামলায় আদালত ৫ আসামির দুবার করে যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। একই রায়ে একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন আবু সামা, মিজান মাতুব্বর, জহিরুল ইসলাম হাওলাদার ও তার বড় ভাই মইদুল ইসলাম হাওলাদার ও ইলিয়াছ। তাদের মধ্যে ইলিয়াস পলাতক। মো. আবদুল হান্নান ওরফে হান্নান মেম্বার নামের এক আসামি বেকসুর খালাস পান।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি নজরুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, “দুই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত ৫ আসামিকে ২ বার করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ সাজা গ্রেপ্তারের দিন থেকে কার্যকর হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ডাকাতির অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় আদালত পাঁচজনকে যাবজ্জীবন ছাড়াও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেন। ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।”
আদালতসূত্র জানায়, “২০১৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাতে কর্ণফুলী থানার বড় উঠান এলাকার এক বাড়ির সীমানা দেয়াল ডিঙিয়ে বাড়ির সীমানায় প্রবেশ করে। এরপর দুবাই প্রবাসীর বাড়ির জানালার গ্রিল কেটে গৃহে প্রবেশ করে ১৩ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকার মালামাল ডাকাতি করে আসামিরা। এ সময় শিশু ও বৃদ্ধা মহিলাকে বেঁধে রাখে। ডাকাতির পর আসামিরা ওই বাড়ির এক তরুণী ও গৃহবধূকে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে।”
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর কর্ণফুলী থানায় মামলা করেন। তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৯ সালের ৩০ আগস্ট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা আদালতে ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পর আদালত এ রায় দেন। দণ্ডাদেশপ্রাপ্তদের তিনজন ডাকাতি ও ধর্ষণের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
পিবিআই সূত্র জানায়, আসামিরা আন্তঃজেলা ডাকাতির সঙ্গে জড়িত।